পুলিশের সামনেই দুই গোষ্ঠীর মারামারি। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহরমপুর শহরে পা রাখার কয়েক ঘণ্টা আগেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কৃষ্ণনাথ কলেজ চত্বর। মঙ্গলবার দুপুরের ওই ঘটনায় জখম তৃণমূলের সরফরাজ শেখ রুবেলকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তির কাউন্সেলিং-এর সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগের জেরে কলেজ চত্বরে ওই সংঘর্ষ বাধে বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের নবগ্রাম বিধানসভার পর্যবেক্ষক সরফরাজ শেখ রুবেল তাঁর প্রতিপক্ষ তথা নিজামুদ্দিন আজাদ ও কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুণ্ডু- সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআর করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের পরে তারা ওই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি অরিন্দম ঘোষ ওরফে রাজা বলেন, ‘‘ঘটনার কথা কানে এসেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানি না।’’ কলেজের অধ্যক্ষ সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। কিন্তু কাউন্সেলিং- এ ব্যস্ত থাকায় বিস্তারিত জানি না। কোনও পক্ষ থেকে আমার কাছে কোনও অভিযোগও করেনি।
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সরফরাজ শেখ রুবেল মাস তিনেক আগে সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেন। তার আগে কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্র রাজনীতিতে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ছিলেন বহরমপুর শহরের জমিদারি এলাকার নিজামুদ্দিনের গোষ্ঠী। দল বদলালেও শত্রুতার কোনও রকম ফের ঘটেনি। তার প্রমাণ এ দিনের ঘটনা। রুবেল বলেন, ‘‘কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তির কাউন্সেলিং-এর সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ আদায় করছিল বহিরাগত নিজামুদ্দিন ও তার দলবল। তাতে আপত্তি তোলায় আমাকে মাটিতে ফেলে যথেচ্ছ ভাবে লাথি, কিল, চড়, ঘুষি মারে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করে নিজামুদ্দিন বলেন, ‘‘তৃণমূলে এলেও পুরনো দল কংগ্রেসের কালচার ছাড়তে পারেনি রুবেল। তাই ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ আদায় করছিল সে। আমরা সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’’ দু’ পক্ষকেই তৃণমূল ও টিএমসিপি-র স্থানীয় নেতাকর্মী বলে মেনে নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতা রাজা ঘোষ বলেন, ‘‘জেলা কমিটির অস্তিত্ব না থাকায় নিজামুদ্দিন এখন সাধারণ সম্পাদকের পদে নেই।’’