Jagaddhatri Puja

অতিমারি পেরিয়ে পথে জনজোয়ার

বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন বারোয়ারিতে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিশেষ করে চাষাপাড়ার বুড়িমার কাছে ভিড় হয়েছিল অনেকটাই বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩৪
Share:

চাষাপাড়া বুড়িমার মণ্ডপে ভিড়। বুধবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

অতিমারির কারণে দু’বছরের যাবতীয় বিধিনিষেধ পার করে কার্যত জনসমুদ্রে ভাসল জগদ্ধাত্রীপুজোর কৃষ্ণনগর। বাঁধ খুলে দিলে যেমন সবেগে ঝাঁপিয়ে নামে জলরাশি, ঠিক যেন তেমন বিধিনিষেধের লাগাম উঠতে দ্বিগুণ উৎসাহে উৎসবে গা ভাসিয়ে দিয়েছে জনতা। উসুল করে নিতে চেয়েছে গত দু’বছরের সব অতৃপ্তি। এতটা ভিড় পুলিশ-প্রশাসনও আশা করতে পারেনি। ফলে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী ও বারোয়ারির স্বেচ্ছাসেবক নিয়েও বুধবার ভিড় সামলাতে কার্যত না্স্তানাবুদ হতে হয়েছে।

Advertisement

শুরু থেকেই কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো একদিনের। কিন্তু এক দিনে এখন যেন আর মন ভরে না শহরবাসীর। অনেকেই তাই বেশ কয়েক বছর ধরে পুজোর দিন বাড়ানোর কথা বলতে শুরু করেছেন। অনেক বারোয়ারি মণ্ডপ সাজিয়ে প্রতিমার সাজগোজ সেরে ফেলছেন দু’-তিন দিন আগে আর কৃষ্ণনাগরিকদের একাংশ তখন থেকেই ঠাকুর দেখা শুরু করে দিচ্ছেন। এ বার তো দু’দিন আগে থেকেই শহরের রাস্তায় ঠাকুর দেখার ভিড় শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, অনেকেই মনে করছেন, জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসবের সময়সীমা বাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ঠিক যেমন এখন কলকাতায় দুর্গাপুজোর দ্বিতীয়া, তৃতীয়া থেকেই ঠাকুর দেখা এবং পুজো-পুজো ব্যাপারটা শুরু হয়ে যায়, ঠিক তেমন।

বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন বারোয়ারিতে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিশেষ করে চাষাপাড়ার বুড়িমার কাছে ভিড় হয়েছিল অনেকটাই বেশি। এক সময় সেখানে প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা লাইন পড়ে যায়। চাষাপাড়া বারোয়ারির সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “সকাল থেকে ভিড় সামল দিতে গিয়ে আমাদের সদস্যদের কার্যত নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। আগের দিন রাত থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছিল।” রাত বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে রাস্তায় জন প্লাবন নামে।

Advertisement

কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল সরকার বলছেন, “এমনতেই শহরের মানুষ বেশ কয়েক বছর ধরে পুজোর আগের দিনই ঠাকুর দেখা শুরু করেছিলেন। তার উপর গত দু’বছর করোনার কারণে উৎসবে তাঁরা মেতে উঠতে পারেনি। জগদ্ধাত্রী পুজোয় চুটিয়ে আনন্দ করার একটা খিদে জমেছিল। সব মিলিয়ে এ বছর তাঁরা বাঁধনহীন ভাবে উৎসবে মেতে উঠতে চাইছেন।”

মঙ্গলবার বিকেল চারটে থেকেই শহরে নো-এন্ট্রি করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বাইক প্রবেশের অনুমতি ছিল। কিন্তু রাত একটু গভীর হতেই রাস্তায় ভিড়ের কারণে কোনও কোনও এলাকায় বাইক প্রবেশের উপরেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। শহরের রাস্তা কার্যত দর্শনার্থীদের দখলে চলে যায়। রাত জাগা ভিড়ের কারণে খুশি শহরের ছোট ব্যবসায়ীরা। কারণ, রাস্তার পাশে অস্থায়ী খাবারের দোকানে এগরোল, মোগলাই বা ফুচকা দেদার বিকিয়েছে সারারাত। কৃষ্ণনগরের পোষ্ট অফিস মোড়ে রাস্তার পাশে এগরোলের দোকান দিয়েছেন স্বামী-স্ত্রী। বুধবার সকালে বিক্রির কথা জিজ্ঞাস করতেই একগাল হেসে বললেন, “যা ভেবেছিলাম তার থেকে বেশি বক্রি হয়েছে। মালপত্রও বেশি করে তুলেছিলাম। লাভের মুখ দেখেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন