মিথ্যা বলছেন, ধমক সাক্ষীকে

মঙ্গলবার অভিযুক্ত পক্ষ জেরার সুযোগ না পাওয়ায় বুধবার ফের বহরমপুর আদালতে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী অভিজিৎ।

Advertisement

নিজস্ব সংহবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

ঘটনাস্থল: খুন হয়েছিল যেখানে। নিজস্ব চিত্র

বেলগাছিয়া ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে বিশেষজ্ঞকে সাক্ষ্য দিতে পাঠানো হলেও বহরমপুর থানা কেস ডায়েরিতে ফরেন্সিক রিপোর্ট না দেওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ হল না।

Advertisement

আর, আশাবরী আবাসনে নিহত বিজয়া বসুর বোনপো অভিজিৎ মিত্র মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন বলে দাবি করলেন অভিযুক্তের আইনজীবী।

মঙ্গলবার অভিযুক্ত পক্ষ জেরার সুযোগ না পাওয়ায় বুধবার ফের বহরমপুর আদালতে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী অভিজিৎ। তিনি জানিয়েছেন, বন্ধ ফ্ল্যাটে মৃতদেহ মেলার দু’দিন আগে সকালে তাঁর মা ইরা মিত্রের সঙ্গে ফোনে বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা হয়েছিল মাসির। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ে আত্রেয়ীর কালসর্প যোগ কাটাতে সন্ধ্যায় এক জ্যোতিষী এসে যজ্ঞ করবেন। তবে ওই কথোপকথনের ‘কল ডিটেলস’ জোগাড় করে পুলিশকে দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

Advertisement

গত ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি বহরমপুর শহরের কাদাই এলাকায় আশাবরী আবাসনের ফ্ল্যাটে বিজয়া, তাঁর বৃদ্ধা পিসি প্রভা দাস ও কিশোরী আত্রেয়ীর দেহ মেলে। সাত দিন বাদে শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় জ্যোতিষী নিত্যানন্দ দাসকে। মায়ের শরীর খারাপ জানিয়ে হাইকোর্টে তিনি জামিনের আবেদন করেছিলেন। গত সোমবার তা নামঞ্জুর হয়ে গিয়েছে। জেলা বিচারক বিভাস পট্টনায়কের এজলাসে ২০ জন ইতিমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষী আছেন ৪৩ জন।

এ দিন অভিযুক্তের আইনজীবী অভিজিতের কাছে জানতে চান, তাঁর মায়ের সঙ্গে মাসির ঠিক ক’টা নাগাদ কথা হয়েছিল? অভিজিৎ বলেন, সেটা এখন তাঁর ঠিক মনে নেই। আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ‘‘পুলিশকে বয়ান দেওয়ার সময়ে কালসর্প যোগের কথা বলেছিলেন?’’ অভিজিৎ বলেন, ‘‘না, বলিনি। এই প্রথম আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলছি।’’

আগের দিন অভিজিৎ সাক্ষ্যে বলেছিলেন, ৪ জানুয়ারি রাত ৮টা নাগাদ মুদির দোকান থেকে ময়দা কিনে তাঁর মাসিকে আবাসনে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। আইনজীবী জানতে চান, ‘‘পুলিশকে সে কথা আগে জানিয়েছিলেন?’’ অভিজিৎ বলেন, ‘‘না, জানাইনি।’’ তখনই আইনজীবী বলে ওঠেন, ‘‘আপনি এজলাসে এসে সাজিয়ে-গুছিয়ে মিথ্যে কথা বলছেন। আপনার কথার সত্যতা থাকলে পুলিশকে আগে জানাতেন। আপনি নেমে আসুন।’’

এ দিন আদালতে এসেছিলেন বেলগাছিয়া ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞ বাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি আইনজীবী গোরা সেন ও প্রশান্ত দত্ত জানান, ল্যাবরেটরির অধিকর্তাকে সমন পাঠানো হয়েছিল। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে বাপন হাজিরা দেন। কিন্তু পুলিশের পাঠানো কেস ডায়েরিতে ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট ছিল না। ফলে তাঁর সাক্ষ্য নেওয়া যায়নি। পরে তিনি ফের সাক্ষ্য দিতে এলে অধিকর্তা যে তাঁকে পাঠাচ্ছেন তা লিখিয়ে নিয়ে আসতে বলেছেন বিচারক। নিজের পরিচয়পত্রও সঙ্গে আনতে বলেছেন। আগামী ২২ থেকে ২৪ অগস্ট ফের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন