Green Crackers

Green Crackers: ‘ওই যে সবুজ বাক্স, ওটাই তো সবুজ বাজি!’

কালীপুজোর ঠিক আগের দিন, বুধবার কৃষ্ণনগরের নানা বাজার ঘুরে বোঝা গেল, নামেই আছে সবুজ বাজি, বাজারে তার দেখা মিলছে না।

Advertisement

সুদীপ ভট্টাচার্য 

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪৮
Share:

বিকোচ্ছে বাজি। বুধবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

আদালত বলেছে, ‘সবুজ বাজি’ বিক্রি করা এবং পোড়ানো। কিন্তু জনতা পড়ছে আকাশ থেকে— সবুজ বাজি, সেটা আবার কী?

Advertisement

কৃষ্ণনগরে পাত্রবাজারে দোকানদার হেসে বলছেন, “ওই যে সবুজ রঙের বাজির বাক্স, ওটাই তো সবুজ বাজি!” কেউ আবার টিপ্পনী কাটছেন, “ও সব সবুজ-টবুজ কিছু না আসলে, সবই বিক্রি করার নিত্য নতুন কৌশল।”

কালীপুজোর ঠিক আগের দিন, বুধবার কৃষ্ণনগরের নানা বাজার ঘুরে বোঝা গেল, নামেই আছে সবুজ বাজি, বাজারে তার দেখা মিলছে না। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে তুবড়ি, রংমশাল, তারাকাঠির মতো হরেক রকম আতশবাজির পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন ষষ্ঠী দত্ত। সবুজ বাজি আছে কি না জানতে চাইতেই ষষ্ঠী বললেন, “ও জিনিস নামেই আছে শুনেছি, কোনও দিন চোখে দেখিনি।”

Advertisement

মেয়ের সঙ্গে ওই দোকানে বাজি কিনতে আসা এক মহিলা কথাটা শুনে একটু থমকে গিয়ে প্রশ্ন করলেন , “তবে কি এই বাজিগুলো চলবে না? সবুজ বাজি পাব কোথায়?” ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা বের করতে দেখে প্রায় আঁতকে উঠলেন তিনি— “আমাদের ছবি তুলবেন না যেন! কী জানি, বাজি কিনতে গিয়ে আবার কোনও ঝামেলায় ফেঁসে না যাই।”

কিন্তু সবুজ বাজি কোথায় পাই?

সারা কৃষ্ণনগরে চক্কর কেটে বোঝা গেল, তার অস্তিত্ব আছে হয়তো কোথাও, কিন্তু এ তল্লাটে কোথাও তার নামগন্ধ নেই। এমনকি তার নামও শোনেননি অনেক ক্রেতা বা বিক্রেতা। ষষ্ঠীতলার মুখে এক ভিড়ে ঠাসা বাজির দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা গেল, “সবুজ বাজি হবে?” দোকানি সঞ্জয় সাহা বলেন, “কোর্টের নির্দেশ শুনে যারা বাজি বানায় তাদের কাছে খোঁজ করেছিলাম, পাইনি। কেউ কেউ বললেন, দিল্লিতে নাকি পাওয়া যায়, এর বেশি জানা নেই।” তার পর এক রাশ ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলে ওঠেন, “কোর্টের নির্দেশের আগেই প্রায় লাখ টাকার মতো বাজি তুলেছি, এখন পুজোর মুখে এসব বললে আমাদের কী হবে ভাবুন তো?”

গোয়ারিবাজারে এক বাজির দোকানে চকলেট বোমের খোঁজ করে নিরাশ এক খদ্দের সবুজ বাজির নাম শুনেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, “সবুজ-হলুদ বুঝি না, চকলেট বোম, কালিপটকা ছাড়া কালীপুজো হচ্ছে, সেটাই তো ভাবতে পারছি না।” এই মানসিকতা এখনও আঁকড়ে বসে রয়েছেন অনেক মানুষই, আইনের পরিবর্তনে তাঁদের মন পাল্টায়নি।

আমজনতার কাছে ‘সবুজ বাজি’ গল্প হলেও সত্যিটা হল, কড়াকড়ির মধ্যেও আতশবাজির বাজার কিন্তু মন্দ নয়। অন্তত কৃষ্ণনগরে। পাত্রবাজারের মুখে এক বাজি বিক্রেতা তো বলেই ফেলেন, “সবুজ বাজি কোথাও খুঁজে পাইনি। তবে আজ দারুণ বাজার, যা দিচ্ছি তা-ই নিয়ে যাচ্ছে লোকে।” মুচকি হেসে তিনি যোগ করেন, “সবুজ বাজি কেউ এখনও খোঁজ করেনি। মনে হয়, সবুজ রঙের বাজি দেখিয়ে সবুজ বাজি বলে দিলেও এই বাজারে দিব্যি কেটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন