অস্ত্র উদ্ধার

অস্ত্রের রমরমায় উদ্বেগে কল্যাণী

সকালের মতো ভিড় নেই। সগুনা বাজারে আটপৌরে চায়ের দোকানে তখনও জনাকয়েক লোক চায়ের অপেক্ষায়। সেই সময় দু’টি বাইক থামল দোকানের সামনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২৪
Share:

সকালের মতো ভিড় নেই। সগুনা বাজারে আটপৌরে চায়ের দোকানে তখনও জনাকয়েক লোক চায়ের অপেক্ষায়। সেই সময় দু’টি বাইক থামল দোকানের সামনে। জনা পাঁচেক যুবক দোকানে ঢুকেই রুখু গলায় হুকুম করল, ‘‘আগে আমাদের চা, পরে অন্যদের।’’

Advertisement

দোকানের মহিলা বলেছিলেন, ‘‘বসো বাবা, এখনই করে দিচ্ছি। ওরা অনেক্ষণ অপেক্ষায় আছেন।’’ বাঁকা হেসে যুবকদের একজন বলেছিলেন, ‘‘যখনই আসি না কেন, লাইন তো শুরু হয় আমার পরেই।’’ কয়েকজন সে কথার প্রতিবাদও করেছিলেন। কিন্তু তারপরেই দোকানের বেঞ্চে ঠক করে একজন যেটা নামিয়ে রেখেছিল তার নাম ওয়ান শটার।

চায়ের দোকানের সেই মহিলা বলছিলেন, ‘‘ওদের অনেক দিন ধরেই চিনি। বেশ পয়সা করেছে। বাইক কিনেছে। কিন্তু কাছে যে ‘মেশিন’ রাখে জানতাম না। এখন এখানে ও জিনিস যে কার কাছে নেই, সেটাই প্রশ্ন!’’

Advertisement

গত এক বছরে সগুনা, গয়েশপুর, হরিণঘাটায় উদ্ধার হওয়া বোমা-আগ্নেয়াস্ত্র আর হদিশ মেলা অস্ত্র কারখানার খবরে চোখ কপালে উঠছে অনেকের। পুলিশ জানতে পেরেছে হরিণঘাটার তিনটি সড়ককে অস্ত্র কারবারিরা করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলা পুলিশের ব্যর্থতাতেই অস্ত্রের এমন রমরমা কারবার। সেই জন্যই সিআইডিকে এসে কল্যাণী থেকে অস্ত্রের কারবারিদের পাকড়াও করে নিয়ে যেতে হচ্ছে। অস্ত্রের এই বাড়বাড়ন্তে এলাকায় বাড়ছে খুচরো অপরাধ। নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়ার দাবি, ‘‘পুলিশ সক্রিয় বলেই তো এত অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। যদি সাধারণ মানুষ নিজের পরিচয় গোপন রেখে আমাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য দেন, তা হলে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ করব।’’

অস্ত্রের এমন রমরমা কারবারে পুলিশকেই দুষছে শাসক দল। কল্যাণীর বিধায়ক তৃণমূলের রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অস্ত্রের এমন রমরমা কারবার সত্যিই উদ্বেগের। শিগ্‌গির এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’’

হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ জানান, পুলিশের আরও উদ্যোগী হওয়া দরকার। হরিণঘাটার, হাবড়ার সঙ্গে সংযোগকারী ঝিকড়া বটতলায়, গাইঘাটা সীমান্তের নগরউখড়া এবং গোপালনগর সীমান্তের নিমতলা বাজারে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন