নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি, রয়ে গেল ফস্কা গেরো

সব মিলিয়ে, করিমপুর বিধানসভা এলাকায় ভোটের দিন বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ঘটা করে ১০ কোম্পানি আধাসেনা নিয়োগ করা হলেও বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক ও সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

জয়প্রকাশ মজুমদারকে মার।

উপ নির্বাচনে অবাধ ভোট করতে অধিকাংশ বুথেই ছিল আধা সেনা। খাতায় কলমে চারদিকেই কড়া পাহারা। তা সত্ত্বেও বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে এ ভাবে কেন মার খেতে হল, সেই প্রশ্ন ঘিরেই সোমবার দিনভর জল্পনা চলল করিমপুরে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দাদেরই একাংশের অভিযোগ, লম্বা চওড়া দাবি সত্ত্বেও আদতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল বেশ ঢিলেঢালা। এ দিন সকাল থেকেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে জয়প্রকাশকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ তৎপর হতে দেখা যায়নি আধা সেনাকেও। এমনকি, একটি বুথ থেকে বিজেপি প্রার্থীকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে আধা সেনার বিরুদ্ধে।

সব মিলিয়ে শুরু থেকেই এ দিন জয়প্রকাশকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় থানারপাড়ার ঘিয়াঘাট ইসলামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ৩২ ও ৩৩ নম্বর বুথের পাশের ঘরেই চলছে রান্নাবান্না। রান্নঘরে রয়েছেন আট-দশ জন। প্রশ্ন ওঠে, মাত্র ১০ জন ভোটকর্মীর রান্নার জন্য এত জন কেন? পাশাপাশি, অভিযোগ ওঠে এজেন্টরা যখন তখন মোবাইল নিয়ে বুথের ভিতরে ঢুকছেন। খবর পেয়ে দুপুর ১১টা নাগাদ সেখানে পৌঁছোন বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ। তিনি ও কয়েকজন সাংবাদিক সেই বুথে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় আধাসেনা ও পুলিশ। বাইরের লোকজন বুথে কী ভাবে ঢুকছেন, তা জানতে চাওয়া হলে কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি।

Advertisement

এরপর জয়প্রকাশ প্রতিবাদ করতে শুরু করলে তাঁকে ঘিরে শুরু হয় গন্ডগোল। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। কোনও নিরাপত্তা পাওয়া যায়নি আধাসেনার কাছেও।

এ ভাবেই করিমপুর ২ ব্লকের অনেক বুথেই আধাসেনা বা পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। বিজেপির নদিয়া উত্তর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলয় সাহা বলেন, ‘‘তৃণমূল সারা বাংলা জুড়েই একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছে। এখানেও পুলিশ আধা সেনাকে তাদের মতো করে ব্যবহার করেছে। গত রাতে পুলিশ বুথে বুথে ঘুরে তৃণমূলের সঙ্গে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’

জেলার পুলিশ সুপার জাফর আজমল কিদোয়াইকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অন্য দিকে, বিক্ষিপ্ত দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে করিমপুর ১ ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এ দিন ভোটের শুরুতে হোগলবেড়িয়ার রামনগর, বালিয়াশিশা, মুরুটিয়ার ফুলখালি, আরবপুর কিংবা করিমপুরের নাটনা বুথে গিয়ে আধা সেনার অতি সক্রিয়তা চোখে পড়ে। কোথাও তেমন লম্বা লাইন দেখা যায়নি। বুথের সামনে ভোটারদের ঢোকার সময় তাঁর পরিচয়পত্র ও ভোটার স্লিপ দেখে তবেই বুথের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে। বুথের সামনে তো বটেই, স্কুলের ছাদের উপরেও রাইফেল উঁচিয়ে পাহারায় ছিল আধাসেনা।

সব মিলিয়ে, করিমপুর বিধানসভা এলাকায় ভোটের দিন বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ঘটা করে ১০ কোম্পানি আধাসেনা নিয়োগ করা হলেও বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। নাকা চেকিং-ও সে ভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি। কিছু জায়গায় কড়াকড়ি থাকলেও অনেক এলাকাতেই অবাধে যাতায়াত করা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন