কাতরাসুর কষ্ট বইছেন সফিরা

প্রতিবার দুর্গাপুজো মিটলেই সুদূর কাশ্মীর থেকে এ রাজ্যে শাল-পশমিনা নিয়ে চলে আসেন কাশ্মীরের একদল যুবক-বৃদ্ধ। তিরিশ-চল্লিশ জন একসঙ্গে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আস্তানা গাড়েন।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৪
Share:

দোকানে খালিদ। নিজস্ব চিত্র

গত ২৯ অক্টোবর জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগ্রামে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন মুর্শিদাবাদের বাহালনগরের পাঁচ শ্রমিক। সেই ঘটনায় মন ভারাক্রান্ত ব্যবসা সূত্রে এই জেলায় আশা কাশ্মীরিদের। খালিদ কাশ্মীরি, শওকত আলিরা বলছেন, ‘‘দোষীদের যেন কড়া শাস্তি হয়।’’

Advertisement

প্রতিবার দুর্গাপুজো মিটলেই সুদূর কাশ্মীর থেকে এ রাজ্যে শাল-পশমিনা নিয়ে চলে আসেন কাশ্মীরের একদল যুবক-বৃদ্ধ। তিরিশ-চল্লিশ জন একসঙ্গে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আস্তানা গাড়েন। তারপর গোটা শীতটা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে তাঁরা শাল-সোয়েটার বিক্রি করেন। পাশাপাশি, বহরমপুরে দোকান ভাড়া নিয়েও অনেকে বিক্রিবাটা চালান। বাতাস রুখু হতে দিনকয়েক আগে কাশ্মীর থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন খালিদরা। বুধবার বহরমপুরের কাদাই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, দোকান খুলে ক্রেতাদের শাল দেখাচ্ছেন খালিদ। কাতরাসুর ঘটনা তুলতে ধরা গলায় বললেন, ‘‘পেটের টানে আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়ে মরতে হল ওঁদের। সংসারে অভাব বলেই না গিয়েছিল। যারা এই জঘন্য ঘটনা ঘটাল, তাদের কড়া শাস্তি হোক।’’

কাতরাসুর ঘটনার কথা তুলতে বৃদ্ধ শওকত আলি বললেন, ‘‘প্রতিবার শীতে এখানে এসে ব্যবসা করি। বাঙালিদের আতিথেয়তার জবাব নেই। আমাদের খাতিরদারির কথাও সকলে বলে। খারাপ লাগছে, আমাদের ওখানে গিয়েই পাঁচজনকে বেঘোরে মরতে হল।’’ তবে এই জেলায় ব্যবসা সূত্রে আসা বেশিরভাগ কাশ্মীরিরই দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চার-পাঁচ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক প্রতি বছর কাশ্মীরে যান কাজের সন্ধানে। এই প্রথম কাশ্মীরের বাইরের কোনও বাসিন্দার জঙ্গিহানায় মৃত্যু হল। কাশ্মীরের অশান্ত পরিবেশ ভাল লাগে না মহম্মদ এজাজ আহমেদ রাঠৌরদের। তাঁর কথায়, ‘‘পরিবার-পরিজন ছেড়ে এত দূর এসে রয়েছি। কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে ওখানে ইন্টারনেটও কাজ করছে না। বহু কষ্টে ফোনে যোগাযোগ করছি পরিবারের সঙ্গে। জানি না, এই অবস্থা কতদিন চলবে।’’ মহম্মদ সফি ওয়ানি বললেন, ‘‘পাঁচটা তাজা প্রাণ চলে গেল! কী লাভ হল এতে। আমরা শান্তি চাই।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন