কৃষকদের পাশে থাকতে রাজ্য সরকারের ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প নতুন নয়। ঘোষমার পরে তা বাস্তবায়িত হতে সময় নিল কিঞ্চিৎ। আজ, সোমবার থেকে সে প্রকল্প শুরু হল মুর্শিদাবাদেও। জেলার প্রতিটি ব্লকে দু’টি মৌজার জন্য ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তার অফিস, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বা কিসান বাজারে শিবির করে কৃষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে। রবিবার, বহরমপুরে এ কথা জানান, জেলাশাসক পি উলাগানাথন। বলেন, ‘‘আবেদনের তথ্য খতিয়ে দেখে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদনকারীর নাম নথিভুক্ত করা হবে। পরে চিপ যুক্ত ডিজিটাল কার্ডও দেওয়া হবে। নথিভূক্ত হয়ে গেলে সরকারি নির্দেশ মেনে দেওয়া হবে আর্থিক সাহায্য।’’
কৃষিদফতরের এক কর্তা বলেন, এক সঙ্গে সব কৃষককে নথিভুক্ত করা যায় না। তাই দফায় দফায় এ ভাবে কৃষকদের নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে রবি ও খরিফ মরসুমে দু’দফায় একর প্রতি পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে। এ ছাড়া এক একরের কম জমির জন্য আনুপাতিক হারে অনুদান নির্ধারিত হবে। ন্যুনতম অনুদানের পরিমাণ হবে এক হাজার টাকা। ১৮-৬০ বছর বয়সি কোনও কৃষকের স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর পরিবারকে সরকার এককালীন দু’লক্ষ টাকাও অনুদান হিসেবে দেবে।
মুর্শিদাবাদ জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ ৯৯ হাজার ১০৭টি কৃষক পরিবার আছে। তার ৯৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি। প্রয়োজনীয় নথি ঠিক থাকলে প্রত্যেক চাষি এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় ২৬টি ব্লক। প্রথম দফায় প্রতিটি ব্লকের একটি করে গ্রাম পঞ্চায়েতের ২টি করে মৌজাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস কিংবা নিকটবর্তী কিসান বাজারে শিবির করা হবে। সেই শিবিরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-সহ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদন করার জন্য কৃষকের জমির রেকর্ড বা ভাগচাষী হতে হবে। কিন্তু নানা কারণে অনেক চাষির নামে জমির রেকর্ড নেই। রেকর্ডের জন্য আবেদন করেও অনেকে সময় মতো পাননি। জেলাশাসক বলেন, ‘‘কৃষি জমির জন্য মিউটেশন ফি লাগবে না। জমে থাকা মিউটেশনের আবেদনের নিস্পত্তি করতে শিবিরও করা হয়েছে। এর পরেও মিউটেশন দ্রুত নিস্পত্তির জন্য কৃষক বন্ধুর জন্য চিহ্নিত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিশেষ শিবির
করা হবে।’’
তবে, এখনও পর্যন্ত কত কৃষি জমির মিউটেশনের আবেদন পড়ে রয়েছে এ দিন তার হিসেব দিতে পারেনি কৃষি দফতর। মুর্শিদাবাদের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘রেকর্ডের আবেদন করা থাকলে প্রশাসন দ্রুত তা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’’