প্লাস্টিক থেকে মুক্তি চাইছে শহর

মাছ, আনাজের বাজার থেকে শুরু করে মনিহারি এমনকি পোশাকের দোকানেও প্লাস্টিকের রাজত্ব। অভিযোগ, প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোনও প্রচার বা ব্যবহারকারীকে শাস্তি—কোনও কিছু নেই। নর্দমায় প্লাস্টিক জমে নষ্ট হচ্ছে নিকাশিব্যবস্থাও পুরসভার দাবি, তাঁরা আগে একাধিক বার উদ্যোগী হয়েছিলেন। বিভিন্ন বাজারে হানা দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় ব্যবসায়ীদের একাংশ অভিযানকারীদের উপরে চড়াও হন। নাগরিক সমাজেরও কেউ প্রতিবাদ করেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩২
Share:

ফুলের বাজারে হাতে হাতে ঘুরছে প্লাস্টিক

শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করার প্রয়ালে নাগরিকদের যুক্ত করতে চাইছে কৃষ্ণনগর পুরসভা। ডাকা হচ্ছে নাগরিক সম্মেলন।

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষ চাইছেন, সম্মেলন থেকেই উঠে আসুক বিভিন্ন প্রস্তাব। নাগরিকরাই জানান, কী কী পন্থা অবলম্বন করে শহরকে প্লাস্টিক-দূষণ থেকে মুক্ত করা যাবে। এক পুর কর্তার কথায়, “শুধু মাত্র আইন প্রয়োগ করে বা জরিমানা করে এই কাজ সম্ভব নয়। নাগরিক সমাজের সামগ্রিক অংশগ্রহণ চাই, সচেতনতা চাই।” তাই আইন প্রয়োগের আগে নাগরিক সম্মেলনের পাশাপাশি মানুষকে সামগ্রিক ভাবে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা।

আজ, বৃহস্পতিবার দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে এই সম্মেলন হচ্ছে। কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক তথা পুরসভার প্রশাসক সৌমেন দত্ত বলছেন, “প্লাস্টিক বর্জনের জন্য একটা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। তার পর শুরু হবে পুলিশ, ক্লাব, স্বেচ্ছেসেবী সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে-বাজারে, দোকানে-দোকানে অভিযান। পুর কর্তৃপক্ষ চাইছেন, সম্মেলনেই নাগরিকেরা নিজেরা সময়সীমা ঠিক করুন। এর জন্য লিফলেট বিলি শুরু হয়েছে। মাইকে প্রচারও হবে।’’

Advertisement

কৃষ্ণনগর পুরসভায় এখনও কার্যত অবাধে, রমরমিয়ে চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। মাছ, আনাজের বাজার থেকে শুরু করে মনিহারি এমনকি পোশাকের দোকানেও প্লাস্টিকের রাজত্ব। অভিযোগ, কোথাও কোনও নজরদারি নেই। প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোনও প্রচার বা ব্যবহারকারীকে শাস্তি—তা-ও নেই। অভিযোগ, এতেই অবাধে প্লাস্টিক দূষণ বাড়ছে শহরে। নর্দমায় প্লাস্টিক জমে নষ্ট হচ্ছে নিকাশিব্যবস্থাও। শহরবাসীর আশঙ্কা, বর্ষা সে ভাবে শুরু হলেই পরিস্থিতে গুরুতর হয়ে উঠবে।

এত দিন কেন উদাসীন ছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ? পুরসভার দাবি, তাঁরা আগে একাধিক বার উদ্যোগী হয়েছিলেন। বিভিন্ন বাজারে হানা দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় পাত্রবাজারের মাছের ব্যবসায়ীরা অভিযানকারীদের উপরে চড়াও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। নাগরিক সমাজেরও কেউ প্রতিবাদ করেনি। বরং মানুষ এখন দোকানে গিয়ে নিজেরাই প্লাস্টিক চান এবং না পেলে বিরক্ত হন। কৃষ্ণনগরের পাত্র বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারক হালদার বলেন, “ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকে মাল দিতে চান না। কিন্তু ক্রেতারাই প্লাস্টিক না-পেলে অসন্তুষ্ট হন। খদ্দের হাতছাড়া হয়।”

সেই কারণেই শহরের মানুষকে সচেতন করে এই কর্মসূচির অন্তর্গত করতে চাইছে পুরসভা। সৌমেনবাবু বলছেন, “বাড়ি বাড়ি চটের ব্যাগ বিলি করা হবে। এতে যেমন প্লাস্টিক-বিরোধী প্রচার হবে তেমনই কেউ নিয়ম ভাঙলে সরাসরি প্রশ্ন করা যাবে কেন তিনি চটের ব্যাগ দেওয়া সত্ত্বেও তা ব্যবহার করেননি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন