পড়াশোনাই পণ, বিয়ে রুখতে বাড়ি থেকে পালালেন ছাত্রী

ছোট থেকেই প্রবল পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল। বাধা ছিল একটাই, আর্থিক দুরবস্থা। যার জেরে পড়াশোনায় ইতি টেনে বিয়ে পাকা করে দেন বাবা। বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েও ফল মেলেনি। শেষমেশ বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের সম্ভাবনায় ইতি টানলেন নিজেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ১৬:৫৮
Share:

মৌমিতা সরকার ও পূজা ঘটক (বাঁ দিক থেকে)। —নিজস্ব চিত্র।

ছোট থেকেই প্রবল পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল। বাধা ছিল একটাই, আর্থিক দুরবস্থা। যার জেরে পড়াশোনায় ইতি টেনে বিয়ে পাকা করে দেন বাবা। বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েও ফল মেলেনি। শেষমেশ বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের সম্ভাবনায় ইতি টানলেন নিজেই। ১৮ দিন বাইরে পালিয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত ফিরে এলেন। ফিরে এসেই ভর্তি হলেন কলেজে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর নাম মৌমিতা সরকার। বর্তমানে তিনি কৃষ্ণনগর উইমেন‌্স কলেজে সংস্কৃত নিয়ে পড়াশোনা করছেন। গত ১৫ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন মৌমিতা। ৩ অগস্ট ভর্তি হন এই কলেজে। কলেজে পূজা ঘটক নামে তাঁর এক বান্ধবীও ভর্তি হয়েছেন। পূজার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়। এই ১৮ দিন পূজার বাড়িতেই কাটিয়েছেন মৌমিতা। মৌমিতার প্রবল পড়াশোনার ইচ্ছা এবং পূজার সততা নজর এড়িয়ে যায়নি। সুদূর মেলবোর্নে বসেও তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ চৌধুরী। দু’জনেরই পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।

কেন মেধাবী মেয়েকে তড়িঘড়ি বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল?

Advertisement

বাবা-মায়ের সঙ্গে বহরমপুরে একচিলতে ঘরে বাস মৌমিতাদের। তাঁর তিন বোন ও এক ভাইও রয়েছে। বাবা দিনমজুর। কোনও রকমে মৌমিতাকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করান বাবা। কিন্তু অনটনের সংসারে মেয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করা আর সম্ভব হচ্ছিল না। তাই তাঁর বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু, মেনে নিতে পারেননি মৌমিতা। বন্ধু পূজাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। বাড়ি থেকে ট্রেনে চেপে সোজা চলে আসেন পূজার কাছে। মনের জোরে কলেজের দরজায় ঘুরে ঘুরে অবশেষে কৃষ্ণনগরের ওই কলেজটিতে ভর্তি হন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন