Ranaghat Robbery

সোনার আংটির ছুতোয় বারবার দোকানে কুন্দন

স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনার দিন কুন্দন-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে পুলিশের গুলিতে ঘায়েল হওয়া এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৩
Share:

ধৃত কুন্দন যাদব। ছবি: সুদেব দাস

ডাকাতির আগে রানাঘাটে নামী সংস্থার গয়নার স্বর্ণবিপণিতে ক্রেতা সেজে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে সোনার আংটি কিনেছিল ধৃত কুন্দন যাদব। শুধু তাই নয়, ডাকাতির সময় আগ্নেয়াস্ত্র দেখে স্বর্ণবিপণির এক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁর দিকে জলের বোতল এগিয়ে দিয়েছিল কুন্দন। শনিবার ডাকাতির পুনর্নির্মাণের সময় এমনই তথ্য পেলেন রানাঘাট পুলিশ জেলার আধিকারিকেরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ অগস্ট রানাঘাট মিশন রোডে স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির প্রায় ২৫ দিন আগে কুন্দন ৩৫ হাজার টাকার একটি সোনার আংটির বরাত দেয়। কিছু টাকা অগ্রিমও দেয়। পরে আংটি নিতে গেলে মাপে গরমিল ধরা পড়ে। তাই আবারও সে ডাকাতির দিন পাঁচেক আগে স্বর্ণবিপণিতে গিয়েছিল। ডাকাতির ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় কুন্দন ক্রেতা সেজে কী কী করেছিল তা অভিনয় করে দেখায়।

পুলিশের দাবি, জেরায় কুন্দন স্বীকার করেছে, কল্যাণীর বি ব্লক বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পর কখনও একা, কখনও আবার দলের কোনও সঙ্গীকে নিয়ে রানাঘাটের ওই স্বর্ণবিপণিতে গিয়েছিল। একাধিকবার দোকানে যাওয়ায় স্বর্ণবিপণির প্রবেশ পথ, কর্মীদের উপস্থিতি ইত্যাদি ছিল তার নখদর্পণে। ডাকাতির দিন স্বর্ণবিপণির ফটকে থাকা দুই নিরাপত্তা রক্ষী তাকে দেখে যাতে সন্দেহ না-করে, অবাধে স্বর্ণবিপণিতে যাতে প্রবেশ করতে পারে, সে কারণে একাধিকবার স্বর্ণবিপণিতে গিয়েছিল কুন্দন। জেরায় পুলিশকে তেমনই জানিয়েছে সে।

Advertisement

তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘রানাঘাটে ডাকাতির 'নীল নকশা' নিজের হাতেই তৈরি করেছিল ধৃত কুন্দন। দিনের কোন সময়ে স্বর্ণবিপণি ও মিশন রোড ফাঁকা থাকতে পারে তা জানতেই বারংবার সেখানে গিয়েছিল এই দুষ্কৃতী।’’ ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় ওই বিপণির কর্মী ভোলা দে কুন্দনের মুখোমুখি হয়। ভোলা জানান, আগে জানতেন না, ওই দুষ্কৃতী কুন্দন। ঘটনার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘দৌড়ে গিয়ে কুন্দনই আমাকে জলের বোতল এনে দিয়েছিল।" ওই স্বর্ণবিপণির এক মহিলা কর্মী বলেন, ‘‘কুন্দন আমাদের ভয় পেতে বারণ করেছিল। সিস্টার বলে সম্বোধন করেছিল। আমাদের সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহারও করেনি।’’

স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনার দিন কুন্দন-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে পুলিশের গুলিতে ঘায়েল হওয়া এক দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও ওই দুষ্কৃতী দলের তিন জন অধরা। তাদের খোঁজে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি বিহারেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে রানাঘাটের ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে একই দিনে পুরুলিয়াতেও একই সংস্থার গয়না স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনার সরাসরি কোনও যোগসূত্র পায়নি তদন্তকারীরা। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রানাঘাট মহাকুমা) রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, "ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। তবে পুরুলিয়ার ডাকাতির সঙ্গে রানাঘাটের ডাকাতির সরাসরি কোনও যোগসূত্র এখনও পাওয়া যায়নি।"

ডাকাতির পর ওই স্বর্ণবিপণির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিপণির কোষাধ্যক্ষ মৃন্ময় সরকার বলেন, ‘‘ডাকাতির ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তায় ব্যবস্থায় বেশ কিছু রদবদল হয়েছে। নিরাপত্তা আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন