নদী পেরিয়ে এসে দেখি আদালত বন্ধ

আচমকা ধর্মঘট বন্ধের সুপারিশের জবাব আচমকা কর্মবিরতিতে দিলেন আইনজীবীরা। ফল ভুগল জনতা। সম্প্রতি বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান জাতীয় আইন কমিশনের কাছে সুপারিশ করেন, আইনজীবীরা আচমকা ধর্মঘট করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৪
Share:

আচমকা ধর্মঘট বন্ধের সুপারিশের জবাব আচমকা কর্মবিরতিতে দিলেন আইনজীবীরা। ফল ভুগল জনতা।

Advertisement

সম্প্রতি বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান জাতীয় আইন কমিশনের কাছে সুপারিশ করেন, আইনজীবীরা আচমকা ধর্মঘট করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেই নিয়ম ‘অ্যাডভোকেটস অ্যাক্টে’ সংযোজনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে আইন কমিশন। তার বিরোধিতা করে হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন সোমবার কর্মবিরতির ডাক দেয়। কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর আদালতের আইনজীবীরাও তাতে সাড়া দেন। আদালতে এসে নাকাল হয়ে ফিরতে হয় লোকজনকে।

এঁদেরই এক জন কৃষ্ণনগরের বাস মালিক বলরাম সাহা। গত ২১ মার্চ বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে তাঁর বাস এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়েছিল। বাস আটক করা হয়েছে। তা ছা়ড়ানোর নির্দেশ পেতে এ দিন বহরমপুর আদালতে এসে তিনি শোনেন, কর্মবিরতি হচ্ছে। ফেরার সময়ে ব্যাজার মুখে বলে যান, ‘‘কাজ হবে না জানলে কে এত দূর ঠেঙিয়ে আস? হঠাৎ করে এ রকম করার মানে কী?’’

Advertisement

খুনের মামলায় অভিযুক্ত স্বামীর মামলা নিয়ে উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করতে নাকাশিপাড়ার তেঘড়ি থেকে কৃষ্ণনগর আদালতে এসেছিলেন মানোয়ারা বিবি। ‘‘এসে দেখি, কোর্ট বন্ধ। নদী পার হয়ে তিন কিলোমিটার হেঁটে বড় আন্দুলিয়া থেকে বাসে করে কৃষ্ণনগরে এসেছি। এর পরেও যদি কাজ না হয় কেমন লাগে বলুন তো!’’ ক্ষোভ ঝরে পড়ে মনোয়ারার গলায়।

বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকায় বহরমপুর থানার কালীতলা চরদিয়াড় থেকে আসেন শম্ভু মণ্ডল। হঠাৎ ‘ছুটি’ দেখে তিনি হয়রান। ধুবুলিয়ার বনগ্রাম থেকে কৃষ্ণনগর আদালতে এসেছিলেন মহাদেব সরকার। ২০১৪ সালের ৮ মে গ্রামে তৃণমূল-বিজেপির গণ্ডগোলে তিনিও অভিযুক্ত। ৬ এপ্রিল শুনানি থাকায় তিনি এসেছিলেন উকিলের সঙ্গে আলোচনা করতে। তেতো গলায় বলেন, ‘‘এই গরমে ২৫ কিলোমিটার মোটরবাইক চালিয়ে এসে যদি দেখি কাজ হল না, কষ্ট তো হবেই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন