ডোমকলে আজ ভোট গোনা

গণনা কেন্দ্রে নেই বামেরাও

এ এক আজব ভোটগণনা। এক দল ব্যান্ডপার্টি আর সবুজ আবীর নিয়ে তৈরি ফাঁকা ময়দানে হইচই করতে। আর বাকি তিন প্রধান দল মার খেয়ে গোসাঘরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০২:২২
Share:

ফের: হোক ‘প্রহসন’, ভোট পরবে শরিক অনেকেই। —নিজস্ব চিত্র।

এ এক আজব ভোটগণনা। এক দল ব্যান্ডপার্টি আর সবুজ আবীর নিয়ে তৈরি ফাঁকা ময়দানে হইচই করতে। আর বাকি তিন প্রধান দল মার খেয়ে গোসাঘরে।

Advertisement

আজ, বুধবার সকাল ৮টা থেকে রাজ্যের আর ছয় পুরসভার সঙ্গে ভোট গোনা শুরু ডোমকলেও। নতুন পুরসভা, তার প্রথম ভোট। কিন্তু তা নিয়ে উত্তেজনা দূরে থাক, বিন্দুমাত্র উৎসাহ নেই ভোটার তথা রাজনৈতিক কর্মীদের একটা বড় অংশের। বদলে রয়েছে হতাশা।

সন্ত্রাস, মারপিট, ইভিএম ভাঙার জেরে পুরভোট কার্যত একবগ্গা হয়ে পড়ার পরে রবিবার দুপুরেই ডোমকল থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছিল কংগ্রেস ও বিজেপি। সিপিএম তা না করলেও মাঠে ছিল নাম-কা-ওয়াস্তে। তবে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনাবাদে ৯৫ ও ৯৬ নম্বর বুথে তাদের সঙ্গে তৃণমূলের গোলমালও হয়। ওই সময়ে ইভিএম ভাঙা হয়েছিল। তার জেরে মঙ্গলবার দু’টি বুথে ফের ভোট হয়।

Advertisement

এবং সেই ভোট যখন চলছে, তখনই ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী গিয়ে হাজির তৃণমূল নেতা সৌমিক হোসেনের বাড়িতে। সৌমিকের দাবি, ‘‘রফিকুল ইতিমধ্যেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। সিপিএম-কংগ্রেস এ বার সাইনবোর্ড হয়ে যাবে।’’ সিপিএম নেতা নারায়ণ দাস পাল্টা বলেন, ‘‘কে কোথায় গেল, আমাদের তা নিয়ে চিন্তা নেই। এই অবৈধ নির্বাচনে ফল নিয়েও ভাবছি না।’’

এ দিন ভোট দিতে এসে গলা উঁচু করেও কথা বলেনি কেউ। হাঁকডাক করতে দেখা গিয়েছে শুধু পুলিশকে। বিরোধীদের দাবি, পুরোটাই নাটক। রবিবার ছাপ্পা ভোটে হিসেবনিকেশ যা হওয়ার হয়েই। এখন ধমক দেওয়া না দেওয়ার কোনও ফারাক নেই। বরং শাসকের নির্দেশেই এই মরা বাজারে তৃণমূল নেতাদের ধমক-ধামক দিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে, সন্দেহ বিরোধীদের।

জোটের নেতারা এ দিনের ভোট নিয়ে আগ্রহ না দেখালেও দুপুরের মধ্যেই ৯৫ নম্বর বুথে ৮১ শতাংশ ও ৯৬ নম্বর বুথে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়ে যায়। লাইনেও দেখা গিয়েছে উভয় দলের সমর্থকদের। সে কথা তুলে তৃণমূলের দাবি, স্বচ্ছ ভাবেই ভোট হয়েছে। শক্তিহীন বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।

ডোমকলে তৃণমূলের প্রধান মুখ, যুবনেতা সৌমিক হোসেনের কটাক্ষ, ‘‘খেলতে না পারলেই ল্যাং মারার অভিযোগ ওঠে। বাম-কংগ্রেস জোট আর সেটাই করছে। ভোট কী হয়েছে, তা জোটের নেতারা হিসেব করে দেখুন।’’ চিরকালই ডোমকলে ভোট মানেই খুনোখুনি, রক্তগঙ্গা। এ বার কার্যত প্রতিরোধহীন একবগ্গা ভোট হওয়ায় তা এড়ানো গিয়েছে। সে কথা তুলে সৌমিকে‌র দাবি, ‘‘ভোটের পরে দু’দিন কেটে গিয়েছে, কেউ কাউকে ধমক দিয়েছে বলে অভিযোগ নেই।’’

কংগ্রেস এবং বিজেপি আগেই প্রার্থী তুলে নেওয়ায় তাদের ডোমকল গার্লস স্কুলে গণনাকেন্দ্রে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। সিপিএম জানিয়েছে, তারাও যাবে না। তাদের তো প্রার্থী প্রত্যাহার করা হয়নি, তা হলে গণনায় যাবে না কেন? নারায়ণের যুক্তি, ‘‘প্রহসনটা দেখার জন্যই আমরা শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলাম। যা দেখেছি, তার ফল জানতে যাওয়ার মানে হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন