Library Worker Shortage

কর্মী-সঙ্কটে ভুগছে জেলার গ্রন্থাগার

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে জেলায় শেষ বার গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। বর্তমানে শহর, গ্রামীণ ও জেলা মিলিয়ে মোট ১১১ টি সরকারি গ্রন্থাগার রয়েছে।

Advertisement

সুদেব দাস

রানাঘাট শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৩০
Share:

বই আছে কিন্তু কর্মী নেই। — ফাইল চিত্র।

সরকারি গ্রন্থাগারের তালা শেষ কবে খোলা হয়েছিল, তা স্থানীয়দের অনেকেই মনে করে বলতে পারছেন না। কোথাও আবার গ্রন্থাগারের সামনে লেখা রয়েছে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার এবং ইংরেজি মাসের প্রথম ও তৃতীয় শনিবার গ্রন্থাগার খোলা থাকে। গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী সঙ্কটের কারণে জেলা জুড়ে শহর ও গ্রামীণ এলাকায় গ্রন্থাগারগুলির ছবিটা মোটামুটি একই রকম। অনেক জায়গায় কর্মী সঙ্কটের কারণে গ্রন্থাগার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে জেলায় শেষ বার গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। বর্তমানে শহর, গ্রামীণ ও জেলা মিলিয়ে মোট ১১১ টি সরকারি গ্রন্থাগার রয়েছে। গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থাগার কর্মী মিলিয়ে ২৫৯ জনের পদ থাকলেও মাত্র ৪৮ জন সেই পদের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। একের পর এক কর্মী অবসর নিলেও নতুন করে সেই শূন্য পদে নিয়োগ না থাকায় সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। বাধ্য হয়ে এক জন গ্রন্থাগারিককে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দু-তিনটি গ্রন্থাগারের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে।

রানাঘাট-১ ব্লকের রামনগর ১ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে রয়েছে - রামনগর সাধারণ গ্রন্থাগার। ১৯৮০ সালে এটি সরকারি অনুমোদন পায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক আগে গ্রন্থাগারিক অবসর নেওয়ার পর, সেই যে তালা পড়েছে, আজও তালা খোলেনি। বহু মূল্যবান বই পোকায় খাচ্ছে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার আনুলিয়া কেদারনাথ স্মৃতি পাঠাগারে গিয়ে দেখা গেল, অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ১৩ হাজারের বেশি বই। পাঠকদের আনাগোনা নেই। তবে গ্রন্থাগারিক শুভ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি মূলত রানাঘাট মহকুমা লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক। মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার এই লাইব্রেরিতে, অন্য দিনে মহকুমা লাইব্রেরিতে থাকি।’’

আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জেলা বইমেলা। মেলা থেকে বই কেনার জন্য সরকারি গ্রন্থাগারগুলিকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে গ্রন্থাগারিক বা গ্রন্থাগার কর্মী না থাকার কারণে গ্রন্থাগারের জন্য প্রয়োজনীয় বই কিনবেন কারা— সেই প্রশ্ন পাঠক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। বইপ্রেমীদের এক জনের অভিযোগ, ‘‘অধিকাংশ দিন গ্রন্থাগার যদি বন্ধ থাকে, তা হলে বই কিনে হবে কী!’’

জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক প্রবোধ মাহাতো বলেন, ‘‘সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। সব গ্রন্থাগার যাতে খোলা রাখা যায় সে জন্য এক এক জনকে, দু’-তিনটি গ্রন্থাগারের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে।’’

নজরে নদিয়ার গ্রন্থাগার

n মোট গ্রন্থাগারের সংখ্যা ১১১।

* জেলা গ্রন্থাগার একটি।

* শহর গ্রন্থাগার ১০ টি।

* গ্রামীণ বা প্রাথমিক ইউনিট গ্রন্থাগার ৯৯টি।

* বিশেষ গ্রন্থাগার একটি। (ফুলিয়া কৃত্তিবাস সংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার)

* গ্রন্থাগার ও গ্রন্থাগার কর্মী সংখ্যা থাকার কথা ২৫৯ জন।

* বর্তমান গ্রন্থাগারিক ও কর্মীর সংখ্যা ৪৮।

* শূন্যপদ রয়েছে ১১১।

* জেলায় শেষ গ্রন্থাগারিক নিয়োগ হয় ২০১০ সালে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন