সেতু ভাঙায় বাধা দিয়ে রেল অবরোধ, দুর্ভোগ

শুক্রবার সকালে রানাঘাট কৃষ্ণনগর এবং শান্তিপুর শাখার কালীনারায়ণপুরের ঘটনা। এ দিন সকাল ৭টা থেকে কালীনারায়ণপুর স্টেশনে রেল অবরোধ করেন কয়েক হাজার মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২৩
Share:

অবরোধের জেরে থমকেছে ট্রেন। ছাড়ার অপেক্ষায় যাত্রীরা। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

ফুট কয়েকের চওড়া সেতু। যাতায়াতের জন্য ভরসা সেই সেতুই। অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, সেই সেতু ভেঙে ফেলা হবে। সেই খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদে নামলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। হল রেল অবরোধও। তাঁদের দাবি, সেতু ভাঙা তো চলবেই না, বরং নতুন করে সংস্কার করে দিতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার সকালে রানাঘাট কৃষ্ণনগর এবং শান্তিপুর শাখার কালীনারায়ণপুরের ঘটনা। এ দিন সকাল ৭টা থেকে কালীনারায়ণপুর স্টেশনে রেল অবরোধ করেন কয়েক হাজার মানুষ। অবরোধের ফলে ডাউন শান্তিপুর লোকাল এবং আপ কৃষ্ণনগর লোকাল আটকে যায়। দুর্ভোগে পড়েন ট্রেনযাত্রীরা। প্রায় এক ঘণ্টা পরে রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

অবরোধের খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধান এবং রানাঘাট উত্তর পুর্ব বিধানসভার বিধায়ক সমীরকুমার পোদ্দার ঘটনাস্থলে যান। বিধায়ক বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তা হলে এর একটা সুরাহা হবে।’’

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট ২ ব্লকের রঘুনাথপুর হিজুলি-১ এবং ২ নম্বর, যুগলকিশোর, রানাঘাট ১ ব্লকের কালীনারায়ণপুর পাহাড়পুর-সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ ওই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই মজুমদার বলেন, “এই সেতুটা তুলে দেওয়া হলে বহু মানুষ বিপদে পড়বেন। বিশেষ করে বৃদ্ধবৃদ্ধা ও স্কুল পড়ুয়ারা। সকলের কথা ভেবে আমাদের এই অবরোধ।’’ আর এক বাসিন্দা সুব্রত নন্দী বলেন, ‘‘নদীর পাশে রয়েছে উত্তরপাড়া হালালপুর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ফুলবাজার। প্রতিদিন রাত থেকে এই বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা সেতু পার হয়ে এই ফুল বাজারে আসেন। তাঁরা সকলেই বিপদে পড়বেন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দিকে, কালীনারায়ণপুর। অন্য দিকে, উত্তরপাড়া হালালপুর। মাঝে চূর্ণী। তার উপর তৈরি হয়েছিল সেতু। সেটির অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় বছর পাঁচেক আগে সংস্কারের কাজ শুরু হয়। সেই কাজ শেষের পথে। পুরানো সেতুর সঙ্গে ফুটপাত ছিল। সেতু সংস্কারের সময় সেটা ভেঙে ফেলা হয়। তার বিকল্প হিসাবে পাশে ওই নদীর উপরে একটি ফুটব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। রেলের দাবি, সেই সেতুর অবস্থা ভাল নয়। কিছুদিন আগে এলাকার মানুষ জানতে পারেন সেটি ভেঙে ফেলা হবে। সেই খবরে এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে কালীনারায়ণপুর যৌথ নাগরিক মঞ্চ গঠন করেন। সংগঠনের সভাপতি দয়াল মণ্ডল বলেন, ‘‘সেতুটা বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক হাজার মানুষ বিপদে পড়বেন। সেটা সকলেই বুঝতে পারছেন। যার কারণে এ দিন কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ অবরোধে সামিল হন। তিনি বলেন, ‘‘সেতুটি সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।’’

পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সেতুটি অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এলাকার মানুষ কিছুক্ষণ রেল অবরোধ করেছিলেন। কোনও ট্রেন বাতিল হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন