হারাধনের বাড়িতে কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
তৃণমূল নেত্রীর প্ররোচনামূলক বক্তব্যের পরেই বিজেপি কর্মীর উপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করলেন বিজেপির তরফে এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
শনিবার ভীমপুর থানার এলাঙ্গিতে নিহত দলীয় কর্মী হারাধন মৃধার বাড়ি গিয়ে কৈলাস দাবি করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বলেছিলেন ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেব,’ তার জন্যই তৃণমূলের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা করছে। আমরা সতর্ক করে দিতে চাই, প্রজাতন্ত্রে হিংসার জায়গা নেই।”
হারাধনের ছেলে স্মরজিৎ পুলিশের কাছে সুজিত বিশ্বাস, বাবলু বিশ্বাস, গণেশ বিশ্বাস-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তারা স সকলেই তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। শুক্রবারই পুলিশ সুজিতকে গ্রেফতার করেছিল। এ দিন কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে ১৪ জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, সুজিতের মাথাতেও চোট রয়েছে। তাই তাকে পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়নি। স্মরজিৎ তাকে মারধর করেছেন বলে সে-ও থানায় পাল্টা অভিযোগ করেছে। সুজিত ছাড়া বাকি আট জন অবশ্য এখনও বেপাত্তা। ভীমপুর থানার দাবি, তাদের খোঁজে শনিবার রাতেও গ্রামে হানা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত বুধবার রাতে মাঠে শুয়ে থাকা হারাধনকে টেনে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরিবার ও গ্রামের লোকজন চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি। মারাত্মক জখম অবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও বৃহস্পতিবার রাতে সেখানেই তিনি মারা যান। খবর পেয়েই অশান্ত হয়ে ওঠে এলাঙ্গি। পুলিশের দু’টি গাড়ি ভাঙচুর হয়, ইটে জখম হন পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মিলিয়ে ছ’জন। শুক্রবার সকালে ভীমপুরে পথ অবরোধ করেই ক্ষান্ত হয়নি বিজেপি, বিকেলে কৃষ্ণনগরে রবীন্দ্র ভবনের সামনে টানা পথ অবরোধও করা হয়।
এ দিন কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে হারাধনের বাড়িতে যান কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে, দলের উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারেরা। তৃণমূলের উদ্দেশে কৈলাস বলেন, “এখনও সোজা আঙুলে কাজ করছি। আঙুল বাঁকা করলে আপনাদের এখানে থাকা মুশকিল হয়ে যাব। কিন্তু আমরা প্রজাতন্ত্রে বিশ্বাস করি। প্রজাতন্ত্রে বদলার কথা বলা উচিত নয়।”
নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, বিজেপিই গোটা রাজ্য জুড়ে নোংরা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। অরাজনৈতিক একটা গ্রাম্য বিবাদের ঘটনাকে ওরা যদি রাজনৈতিক রং দিতে চায়, কিছুই বলার নেই।’’