বহরমপুরে তৃণমূলনেত্রী, তোপ সেই অধীরকেই

কোনও আড়াল না রেখেই এ দিন, মমতা বলেন, ‘‘ওঁকে চিনুন। আপনাদের সাংসদ তো সব সময়েই সবাইকে চোর-ডাকাত বলে। সবাইকে সারদা-নারদা দেখায়। জানেন, নিজে যে কত কিছুর মধ্যে জড়িত উনি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৭
Share:

জনসভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বহরমপুর স্টেডিয়ামে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

কখনও মালদহ কখনও বা দিনাজপুর— গত পাঁচ দিনে সুদূর উত্তরবঙ্গ থেকে তিন-তিন বার মুর্শিদাবাদের মাটিতে নেমে এসে, তিনি শুনিয়ে গিয়েছেন, কংগ্রেসের আরএসএস যোগ কিংবা কেন্দ্রে তৃণমূলের হাত ধরে সরকার গড়ার কথা।

Advertisement

লাগাতার সেই মুর্শিদাবাদ সফরের শেষ ধাপে, শুক্রবার দুপুরে তাঁর কপ্টার নেমে এসেছিল বহরমপুর স্টেডিয়ামে। তবে, এ বার আরএসএস সংশ্রবের পাশাপাশি তাঁর মিনিট পঁচিশের বক্তব্যে অধীর চৌধুরীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, বহরমপুরের ‘অতি চেনা’ অধীরের ‘অচেনা’ চেহারা চেনানোর চেষ্টা করে গেলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কোনও আড়াল না রেখেই এ দিন, মমতা বলেন, ‘‘ওঁকে চিনুন। আপনাদের সাংসদ তো সব সময়েই সবাইকে চোর-ডাকাত বলে। সবাইকে সারদা-নারদা দেখায়। জানেন, নিজে যে কত কিছুর মধ্যে জড়িত উনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ইলেকট্রিকের চুল্লিতে কী ভাবে লোক পোড়াতে হয় জানা আছে ওঁর, মনে পড়ছে ঘটনাটা? জোড়া খুন কী করে হয়েছিল, মনে আছে? বৈদিক ভিলেজ কী করে হল— আমি সব জানি। কিন্তু জেনেও আমি মুখ খুলব না। কারণ রাজনৈতিক সৌজন্য মেনে চলি আমি।’’

Advertisement

অধীরের বিরুদ্ধে যে সাতটি খুনের মামলা রয়েছে, নাম না করে তার সব ক’টি এ ভাবেই চেনানোর চেষ্টা করেন মমতা। তার পরেই সটান চলে যান অধীরের সঙ্গে বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে।

মমতার দাবি, ‘‘সংসদে অধিবেশনের শেষ দিনেও তিনি আমাদের (তৃণমূল) চোর বলেছেন আর তা শুনে টেবিল চাপড়েছে বিজেপি। কী বলবেন এর পরে! আমি বলি তৃণমূল যদি চোর হয়, তুমি ডাকাতদের সর্দার!’’ এর পরেই বলেন, ‘‘কাকে মদত দিচ্ছ। বিজেপির লোকেরা টেবিল চাপড়াচ্ছে, আর তুমি সারদা নারদা বলছ। বুকের পাটা থাকলে যাও ১৯৮০ সাল থেকে সারদা হয়েছে, সে দিন থেকে তদন্ত কর। সিপিএম-কংগ্রেস সব কটা জেলে যাবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সংখ্যালঘু প্রভাবিত মুর্শিদাবাদে তাঁর কথায় যে নাগরিকপঞ্জির প্রসঙ্গ আসবে, আঁচ করা গিয়েছিল আগেই। এ দিন সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসকে কখনও তো নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে একটা শব্দও খরচ করতে শুনলাম না। ওই এনআরসি আমরা ক্ষমতায় এলে বাতিল করে দেব। বদলে দেব এনবিসি’তে, ন্যাশনাল বিদায় সার্টিফিকেট!’’

তাঁর দাবি, নাগরিকপঞ্জির আড়ালে ২২ লক্ষ হিন্দু, ২০ মুসলিমকে দেশ ছাড়া করতে চাইছে বিজেপি সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে নাগরিক বিল সংশোধন করা যায়?’’ সেই ‘দুর্দিন’ ঠেকাতে আঞ্চলিক দলগুলিই যে ভরসা ফের এক বার মনে পড়িয়ে দিয়ে মমতার আর্জি, ‘‘মনে রাখবেন, বিজেপি নয়, একক ভাবে কংগ্রেসও নয়। দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলিই কেন্দ্রে সরকার গড়বে। যার নেতৃত্ব দেবে তৃণমূল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন