গোলমাল ‘লক্ষ্মী মেয়ে’ শুনেও, ক্ষুব্ধ মমতা

মমতা সভায় ঢুকে মঞ্চে ওঠার পরে তা এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, বক্তৃতা থামিয়ে প্রায় দশ মিনিট বসে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। বার-বার অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে মহিলাদের শান্ত হয়ে বসতে বলতে হয় তাঁকে।

Advertisement

সন্দীপ পাল

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১২
Share:

হঠাৎ কাছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোঁয়া পেতে ভাঙলেন নিরাপত্তা বেষ্টনী। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

হেলিকপ্টারের শব্দ শুনেই জনতা উদ্বেল। বিশেষ করে মহিলাদের বসার জায়গায় উল্লাস কার্যত বাঁধভাঙা। মাথায় ঘোমটা, কাঁকে বাচ্চা, অন্য হাতে ধরা মোবাইলে ‘দিদি’র ছবি তুলতে মরিয়া চেষ্টা, গুঁতোগুঁতি। এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় বসার জায়গার দখল নিয়ে ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ। সভায় মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা ক্রমশ তেতে উঠতে থাকে।

Advertisement

মমতা সভায় ঢুকে মঞ্চে ওঠার পরে তা এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, বক্তৃতা থামিয়ে প্রায় দশ মিনিট বসে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। বার-বার অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে মহিলাদের শান্ত হয়ে বসতে বলতে হয় তাঁকে। সভায় এর ফলে যে সার্বিক অব্যবস্থা দেখা দিচ্ছে তার জন্য একাধিক বার আয়োজকদের উদ্দেশে বিরক্তিও প্রকাশ করেন। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঞ্চ থেকে নেমে সোজা ব্যারিকেডের বাঁশের উপর উঠে পড়েন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। মহিলাদের একাংশকে সরিয়ে সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বসার জায়গা করে দেওয়ার পর সভার কাজ আবার শুরু হয়। এর পর বগুলার সভায় প্রথম থেকেই আর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড খুলে মহিলা দর্শকদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বলা হয়। সেখানে আর এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

শনিবার কালীগঞ্জের পানিঘাটার নির্বাচনী জনসভায় মোটামুটি সময়েই পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। মহিলাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় অধিকাংশ মহিলা দর্শক মোবাইলে মমতার ছবি তুলতে উঁঠে দাঁড়ান। তখন পাশে দাঁড়ানো মহিলারা বসার জায়গা দখল করতে হুড়োহুড়ি শুরু করেন। তাতেই তর্কাতর্কি, হাতাহাতি, চিৎকার শুরু হয়। সেটা দেখেই মমতা প্রথমে ‘‘আপনারা তো মায়ের মতো, লক্ষ্মী মেয়ে’’ বলে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তাতে কাজ না হলে তিনি ‘‘আপনারা শান্ত হয়ে বসুন, বসে পড়ুন’’ বলার পরেও গোলমাল থামে না। চিৎকার ক্রমশ বাড়তে থাকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী রাগত ভাবে আয়োজকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘এ সবও কি আমাকে করতে হবে?’’

Advertisement

প্রশাসনিক কর্তা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা শশব্যস্ত হয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে ছোটাছুটি করতে থাকেন। কাজ হয় না। বিরক্ত মমতা বক্তৃতা দিতে-দিতেই ধমকে ওঠেন, ‘‘যদি কেউ চলে যেতে চায় তাকে চলে যেতে দিন। চিৎকার বন্ধ হবে।’’ চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে মিনিট দশেক বক্তৃতা থামিয়ে চেয়ারে গুম হয়ে বসে থাকেন মমতা। মঞ্চ থেকেই নির্দেশ দেন, ‘‘লোক কি বেশি হয়ে গিয়েছে? তা হলে সামনে যে ঘেরা জায়গাটুকু রাখা আছে তার মধ্যে জায়গা করে দিন।’’ সঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এটাও কি আমাকেই করতে হবে? এটা আমি আসার আগে করা যায় না?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement