উত্তর-দক্ষিণের দ্বিধায় পদ্ম

ঠিকঠাক হিসাব করলে হাতে আর পাঁচটি মাত্র সপ্তাহ আছে। অথচ এখনও রানাঘাট কেন্দ্রে ঘোষণা হয়নি প্রার্থীর নাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০২:৪৮
Share:

দলীয় কার্যালয়ে থরে থরে সাজানো রং, নানা মাপের তুলি, রং গোলার পাত্র। দলীয় নেতাকর্মীদের পকেটে তৈরি ভোটের স্লোগান, ছড়াও। কিন্তু প্রশ্ন হল কার জন্য এবং কবে সে সব লেখা হবে? রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের গ্রাম থেকে শহর— সর্বত্রই এখন এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে।

Advertisement

ঠিকঠাক হিসাব করলে হাতে আর পাঁচটি মাত্র সপ্তাহ আছে। অথচ এখনও রানাঘাট কেন্দ্রে ঘোষণা হয়নি প্রার্থীর নাম। শাসক দল বা সিপিএম প্রার্থীরা যেখানে জোরকদমে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন, সেখানে রানাঘাট লোকসভা আসনে কে বিজেপির প্রার্থী হবেন, তা নিয়েই চলছে গুঞ্জন। বাতাসে ভাসছে একাধিক নাম। ফলে প্রচারের জন্য চুন করা দেওয়াল এখনও সাদা। শূন্য দেওয়ালের মতো ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা।

পাশাপাশি, লোকসভা আসনের অবস্থানগত কারণে ভোটের মুখে নবদ্বীপ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা বদলে গিয়েছে। ২০১৬ সালে সংগঠনের কাজের সুবিধার জন্য নদিয়াকে দুটি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে বিজেপি। নদিয়া উত্তর এবং দক্ষিণ। শুরু থেকেই নবদ্বীপ ছিল বিজেপির উত্তর সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত। নবদ্বীপ ছাড়াও বিজেপি তাদের নদিয়া উত্তরের মধ্যে আরও যে বিধানসভা গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল তার মধ্যে করিমপুর, পলাশিপাড়া, তেহট্ট, কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, চাপড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর এবং দক্ষিণ রয়েছে। অন্য দিকে, নদিয়া দক্ষিণে রয়েছে কৃষ্ণগঞ্জ, শান্তিপুর, চাকদহ, হরিণঘাটা, কল্যাণী এবং রাণাঘাটের তিনটি বিধানসভা।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এর মধ্যে নবদ্বীপ এবং করিমপুরের বেলায় দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা। করিমপুর বিধানসভা হিসাবে নদিয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হলেও লোকসভা হিসাবে মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত। অন্য দিকে নবদ্বীপ সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির উত্তর নদিয়া সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত হলেও লোকসভা হিসাবে তা রানাঘাটের মধ্যে পড়েছে। যে রানাঘাট আবার নদিয়া দক্ষিণের অন্তর্গত। ফলে যে মুহূর্তে লোকসভা ভোট ঘোষণা হয়ে গেল, তখন থেকেই নবদ্বীপ বা করিমপুরের বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থান বদলে গিয়েছে। ফলে গত চার বছর ধরে জেলার যে নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে নবদ্বীপে বিজেপির যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছিল, সেই জেলা নেতাদের হাতে লোকসভা ভোটে নবদ্বীপের দায়িত্ব থাকছে না।

ফলে ২০১৬ থেকে নবদ্বীপ বিজেপির উত্তর নদিয়া জেলার সভাপতি আশুতোষ পাল এবং পরবর্তী কালে ২০১৮ থেকে মহাদেব সরকারের খাস তালুক হলেও লোকসভা ভোটে নবদ্বীপের দায়িত্ব বর্তেছে দক্ষিণের সভাপতি জগন্নাথ সরকারের উপর। এত দিন যাবতীয় কাজে নবদ্বীপের নেতা কর্মীরা কৃষ্ণনগরের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের জন্য ছুটতে হবে সেই রানাঘাট। আবার সেখানে যাঁদের কাছ থেকে কাগজপত্র বা অন্যান্য কাজ বুঝে নিতে হবে, তাঁদের সঙ্গে আদৌ পরিচিত নন নবদ্বীপের নেতাকর্মীরা। সব মিলিয়ে সমস্যা জটিল বলেই দলীয় সূত্রের খবর। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি বিজেপির নবদ্বীপ উত্তর মণ্ডল সভাপতি শশধর নন্দী বা দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি ভোলানাথ সিকদার। সব মিলিয়ে নবদ্বীপে বিজেপি একের পর এক সমস্যায় পড়ে বেশ বেসামাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন