লাইনে মুখ থুবড়ে লরি

থমকাল ট্রেন, স্তব্ধ হল সড়ক

শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ স্থানীয় পঞ্চাননতলা রেলগেটের কাছে অ্যাক্সেল ভেঙে ২ নম্বর লাইনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে লরিটি। ফলে আপ ও ডাউনে সব ট্রেনই ১ নম্বর লাইন দিয়ে চালাতে হয়। দুপুর পর্যন্ত ভাগীরথী ও হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস-সহ সব ট্রেন দেড়-দু’ঘণ্টা দেরিতে চলে। সকালের দিকে লালগোলা-শিয়ালদহ ডাউন মেমু একটি, আপ ও ডাউন মিলিয়ে লালগোলা-রানাঘাট দু’টি মেমু ট্রেন বাতিল করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

স্তব্ধ: বিকল লরি রেললাইন থেকে সরাতে নামানো হচ্ছে পাথর কুচি। শনিবার বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভোরে বহরমপুর আর কাশিমবাজার স্টেশনের মাঝখানে রেললাইনে ভেঙে পড়েছিল পাথর বোঝাই দশ চাকার লরি। তার জেরে শিয়ালদহ বিভাগের লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখায় দুপুর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। জাতীয় সড়কের উপরে ওই রেলগে‌ট। ফলে সকালে থেকেই তীব্র যানজট হয়। যার ফল ফল ভুগতে হল তামাম শহরবাসীকে।

Advertisement

শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ স্থানীয় পঞ্চাননতলা রেলগেটের কাছে অ্যাক্সেল ভেঙে ২ নম্বর লাইনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে লরিটি। ফলে আপ ও ডাউনে সব ট্রেনই ১ নম্বর লাইন দিয়ে চালাতে হয়। দুপুর পর্যন্ত ভাগীরথী ও হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস-সহ সব ট্রেন দেড়-দু’ঘণ্টা দেরিতে চলে। সকালের দিকে লালগোলা-শিয়ালদহ ডাউন মেমু একটি, আপ ও ডাউন মিলিয়ে লালগোলা-রানাঘাট দু’টি মেমু ট্রেন বাতিল করা হয়। রেলের ওই শাখার ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর সুশীলকুমার ঝা বলেন, ‘‘রেলগেট থেকে ভাঙা লরি ও পাথর সরানোর পরে দুপুর সাড়ে ১১টা নাগাদ দু’টি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।’’

দুপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও যানজট চলেছে দিনভর। বহরমপুর শহরে ঢোকার মুখে পঞ্চাননতলা, চুঁয়াপুর ও ভাকুড়ি মিলিয়ে মোট তিনটি রেলগেট আছে। রেল ওভারব্রিজ তৈরির জন্য চুঁয়াপুর রেলগেট দিয়ে বছরখানেক আগে থেকেই সাইকেল, মোটরবাইক ও টোটো বাদে কোনও যানবাহন চলাচল বন্ধ। ‘হাইট বার’ পুঁতে ভাকুড়ি রেলগেট দিয়েও ভারী যানবাহন চলা বন্ধ করা হয়েছে। বহরমপুর শহরের বুক চিরে পঞ্চানতলা রেলগেট হয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক চলে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা। দু’লেনের সেই রেলগেটের উপরে লরি ভেঙে পড়ায় যাতায়াতের জন্য ছিল কেবল একটি ‘লেন’। কলকাতামুখী গাড়ির জট পৌঁছে যায় রেলগেট থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে নবগ্রামে মেহেদিপুর পর্যন্ত। উত্তরবঙ্গের গাড়ির সার থমকে দাঁড়ায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে আখের মিল-বলরামপুরে।

Advertisement

কান্দি, রঘুনাথগঞ্জ, ফরাক্কা, ডোমকল, জলঙ্গির অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজে যাবেন বলে বহরমপুর থেকে বাসে চেপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথেই আটকে থাকেন নিত্যযাত্রীরা। জেলার অন্য এলাকা থেকে যাঁরা বহরমপুরের অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজে, বাজার করতে আসছিলেন, আটকে থাকেন তাঁরাও।

উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের শিলিগুড়িগামী একটি বাসের কন্ডাক্টর অনিমেষ মিত্র বলেন, ‘‘বহরমপুরের ভাকুড়ি থেকে গির্জার মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথ পৌঁছতে লাগল পাক্কা আড়াই ঘণ্টা। প্রায়ই এ রকম কিছু না কিছু ঘটে। আর পারা
যায় না।’’

কোচবিহারগামী ওই বাসের যাত্রী হরেন মণ্ডল বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে যাওয়ার রেলপথ আপাতত বন্ধ। সড়ক পথেও এই দুর্ভোগ। যাতায়াত করব কী ভাবে?’’

বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তীর খেদ, ‘‘যানজটের কারণে গ্রামের ক্রেতারা বহরমপুর শহর থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। আমরা মাছি তাড়াচ্ছি।’’

বলরামপুরের কাছে নির্মীয়মাণ বাইপাস চালু না হওয়া পর্যন্ত যানজট সমস্যার আশু সমাধান অবশ্য কারও চোখে পড়ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন