ganga

Murshidabad: দেড় বিঘা জমি বেচে গঙ্গার পাড় বাঁধাচ্ছেন আমির

গ্রামে ভাঙন রোধে কানাকড়িও বরাদ্দ হয়নি। তাই পৈতৃক বাড়ি বাঁচাতে জমি বেচে গঙ্গার পাড় বাঁধাতে শুরু করেছেন শিকদারপুরের আমির হোসেন।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২২ ০৮:১১
Share:

চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র।

বর্ষা শুরু হতেই জল বাড়ছে গঙ্গায়। তাতেই ঘুম ছুটেছে শমসেরগঞ্জের শিকদারপুরের গঙ্গারপাড়ের বাসিন্দাদের।

Advertisement

সরকার ফিরে তাকায়নি। অভিযোগ, এই গ্রামে ভাঙন রোধে কানাকড়িও বরাদ্দ হয়নি। তাই পৈতৃক বাড়ি বাঁচাতে জমি বেচে গঙ্গার পাড় বাঁধাতে শুরু করেছেন শিকদারপুরের আমির হোসেন। দেড় বিঘা জমি বিক্রি করে সেই টাকা এবং জমানো অর্থে দু’সপ্তাহ আগে ভাঙন রোধে পাড় বাঁধাতে শুরু করেছেন তিনি। বাঁশের খাঁচা ফেলে জালের মধ্যে ইট, পাথর, বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে গঙ্গার পাড় বরাবর ৫৫০ মিটার এলাকা জুড়ে। ইতিমধ্যেই ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কাজ চলছে এখনও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের বাড়ি বাঁচাতে পারবেন কি না, সেই ভাবনায় ঘুম ছুটেছে তাঁর। আমির বলছেন, “এই জমিতে ২৬ বছর আগে যখন ঘর উঠেছিল তখন গঙ্গা ছিল প্রায় ১০-১২ কিমি দূরে। সাইকেল ঘণ্টাখানেক চালিয়ে নদী দেখতে যেতে হত। ভাবতেও পারিনি, এ ভাবে দুয়ারে হানা দেবে নদী। বছর চারেক আগে পুরনো বাড়িতে প্রচুর খরচ করে মার্বেল বসিয়েছি। উঠেছে দোতলা। তখনও গঙ্গা ছিল প্রায় দেড় কিমি দূরে। নদী পাড় ভাঙতে ভাঙতে এখন চলে এসেছে বাড়ি থেকে মাত্র তিনশো মিটার দূরে।” আমির বলছেন, “নদীর পাড়েই বাগান, জমি, বাড়ি। গত বছর শমসেরগঞ্জে চাচন্ড থেকে ধুসরিপাড়া পর্যন্ত ভাঙন হয়েছে। তার আঁচ এসে পড়েছিল আমার বাড়ির সামনেও। তখন কোনওরকমে ৩০ ফুট মতো এলাকায় পাড় বরাবর বাঁশ পুঁতে, বালির বস্তা, ইট ফেলে রুখেছিলাম ভাঙন। ভেবেছিলাম এ বার হয়তো সরকার ভাঙন রুখবে। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’ বাড়ি, জমি, বাগান বাঁচাতে বাড়ির সামনে নদীর পাড় বরাবর ৫৫০ মিটার এলাকা বাঁধাচ্ছেন তিনি। ২০ জন শ্রমিক প্রতিদিন ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। বাঁশের খাঁচা তৈরি করতে ১৮০ টাকা করে হাজারখানেক বাঁশ কিনেছেন। নাইলনের কয়েকশো জালও কিনেছেন। ৫৫০ মিটার এলাকা জুড়ে বাঁশের খাঁচা ফেলা হচ্ছে। তার পিছনে নাইলনের জালের মধ্যে বস্তাবোঝাই ভাঙা ইট পুরে সেলাই করে ফেলা হচ্ছে নদীর পাড়ে। তার পিছনে বড় বড় পাথর। কয়েক ট্রাক পাথর কিনে আনা হয়েছে ঝাড়খণ্ড থেকে। কিন্তু এ ভাবে কত টাকা খরচ করতে পারবেন? আমির বলেন, “জানি না। দেড় বিঘা জমি বিক্রি করেছি। কিছু টাকা জমানো ছিল। প্রয়োজনে আরও দু’বিঘা জমি বিক্রি করব। প্রতিবেশীরা সকলেই দিনমজুর, বিড়ি শ্রমিক। এ কাজে অর্থসাহায্য করার সামর্থ্যতাঁদের নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন