Ganga Erosion

দুয়ারে গঙ্গা! মুর্শিদাবাদে কাকভোর থেকে ভাঙনে নদীগর্ভে অন্তত ৩০টি বাড়ি, সব হারানোর হাহাকার

বৃহস্পতিবার কাকভোরে শুরু হয় ভাঙন। ইতিমধ্যেই গ্রামের একাধিক বসতবাড়ি, জমি, রাস্তা চলে গিয়েছে গঙ্গার গর্ভে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙনের ভয়াবহতার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩৮
Share:

কাকভোর থেকে শুরু হওয়া গঙ্গার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন বহু মানুষ। — নিজস্ব চিত্র।

যত ক্ষণে ঘুম ভাঙল, তার আগেই সব শেষ। গঙ্গাগর্ভে বিলীন একমাত্র মাটির বাঁধ, একাধিক পাকা বাড়ি থেকে শুরু করে গবাদি পশু। যে নিকোনো উঠোনে বুধবার বিকেলেও ছুটে বেড়িয়েছে কচিকাঁচার দল, আজ তা উত্তাল গঙ্গার পেটে। ভোরের আচমকা ভাঙ্গনে বিপন্ন মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের গঙ্গাপাড়ের কয়েকশো পরিবার।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মুর্শিদাবাদে শমশেরগঞ্জ ব্লকের উত্তর চাঁচন্ড গ্রামে গঙ্গার ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার নেয়। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টি বাড়ি। গঙ্গা গিলে খেয়েছে বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি থেকে শুরু করে গবাদি পশু। গঙ্গাগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে দীর্ঘ দিনের মাটির বাঁধটিও। বিপজ্জনক ভাবে নদীর উপর ঝুলছে এলাকার একাধিক পাকা বাড়ি। যে কোনও মুহূর্তে তা তলিয়ে যাবে গঙ্গায়। বাড়ির যাবতীয় জিনিসপত্র চোখের সামনে গঙ্গায় তলিয়ে যেতে দেখেও অসহায় স্থানীয়রা। ভাঙ্গনের আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছে শয়ে শয়ে পরিবার। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার কাকভোরে উত্তর চাঁচন্ড গ্রামে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়। চোখের নিমেষে তলিয়ে যায় গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি। তার পর আস্তে আস্তে আরও কয়েকটি বাড়ি গিলে নেয় নদী। জীবন বাজি রেখে কোনও রকমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন পরিবারের সদস্যেরা।

ভিটেহারা মানুষের মনে বাসা বেধেছে ভাঙনের আতঙ্ক। ঘরবাড়ি সব হারানো মহিদুর রহমান বলেন, ‘‘ঘুমের মধ্যে হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে উঠে দেখি জল উঠোনে! বাড়ির অর্ধেকটা গঙ্গাগর্ভে চলে গিয়েছে। গোয়ালঘরও নদীতে। চোখের সামনে ছটফট করে জলে ডুবে মারা যাচ্ছে গরু, ছাগলগুলো। টাকাপয়সা, আসবাবপত্র সব কিছু রেখে কোনও ক্রমে প্রাণটুকু নিয়ে পালিয়ে এসেছি।’’ সরকারি উদাসীনতার কারণেই এই অবস্থা, অভিযোগ অনেকেরই। একই গ্রামের বাসিন্দা মর্জিনা বিবি বলেন, ‘‘মাটির বাঁধকে পাকা করার জন্য বার বার দাবি জানিয়েও কিছু হয়নি। পাকা বাঁধ থাকলে আমাদের এ ভাবে সব কিছু হারাতে হত না।’’

Advertisement

ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মৈত্র বলেন, ‘‘ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকায় ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করা প্রশাসনের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেচ দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন