সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র।
শনিবার কালীগঞ্জে নিহত ১০ বছরের নাবালিকা তমন্না খাতুনের বাড়ি গিয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়। সেখান থেকেই তৃণমূল ও পুলিশের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানালেন তাঁরা।
তমন্না-হত্যার প্রতিবাদে শনিবার শোক ও শপথের সমাবেশ হয়ছিল পলাশীতে। সেখানে সেলিম, মীনাক্ষি ছাড়াও বক্তৃতা করেন সুমিত দে, রমা বিশ্বাস, অলকেশ দাস, জামির মোল্লা, এসএম সাদী ও দেবাশীষ আচার্য্য। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মেঘলাল শেখ। সভার আগে মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষি-সহ একাধিক রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব কালীগঞ্জে নিহত তমন্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন। তমন্নার মা সাবিনার কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনাও শোনেন তাঁরা। এর পর সেখান থেকে বেরিয়ে সিপিএমের প্রতিবাদ সমাবেশে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও পুলিশকে নিশানা করে সিপিএম নেতৃত্ব।
মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়।
শুধু তা-ই নয়, শনিবারের সমাবেশে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এসপি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন সেলিম। বক্তৃতা চলাকালীন জনতার উদ্দেশ্যে সেলিম প্রশ্ন করেন, "এখানকার এসপিকে কীসের বাচ্চা বলা উচিত?" অকথ্য শব্দে উত্তর দেন কয়েক জন কর্মী সমর্থক। সেলিম ফের একই প্রশ্ন করেন, এবারে সমস্বরে ভেসে আসে নানা অকথ্য শব্দ। সেলিমের বক্তৃতায় শব্দচয়ন নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি, সভা থেকে সেলিম পুলিশকে নিশানা করে বলেন, "শাসক দলের ইশারায় চলছে এখানকার পুলিশ। রাজনীতির প্রভাব মুক্ত হয়ে এফআইআরে নাম থাকা প্রত্যেককে গ্রেফতার করতে হবে।" নিহত তমন্নার মা-ও জানিয়েছেন, যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁদের সকলকেই তিনি চেনেন। সে কথা পুলিশকে তিনি বলেছেন। কিন্তু তার পরেও কেন অভিযুক্তদের ধরা যাচ্ছে না? এ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশকে তো একশোবার বলা হয়েছে কারা ছিল ওখানে। আমি তো চিনি সবাইকে।”
কালীগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচনের দিন বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তমন্নার। শুক্রবার রাতে ওই ঘটনায় জড়িত আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ এবং তাঁর পুত্র বিমল শেখ। মৃতার মায়ের মুখে এই গাওয়ালের নামও শোনা গিয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, গাওয়ালই বোমা ছোড়ার নির্দেশ দেন। তিনিই ‘মূল মাথা’। ফলে এই নিয়ে কালীগঞ্জের ঘটনায় মোট গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯। ঘটনায় জড়িও বাকিদেরও খোঁজ চলছে।