চিকিৎসক আসেননি, তালাবন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র

কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন সাত সকালে। কেউ হেঁটে এসেছেন দীর্ঘ তিন কিলোমিটার পথ। কারও গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। কেউ আবার কোমরের যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। বৈশাখের চাঁদাফাটা রোদে সুতির বাজে গাজিপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শতাধিক রোগী এ ভাবেই অপেক্ষা করলেন দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৪
Share:

কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন সাত সকালে। কেউ হেঁটে এসেছেন দীর্ঘ তিন কিলোমিটার পথ। কারও গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। কেউ আবার কোমরের যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। বৈশাখের চাঁদাফাটা রোদে সুতির বাজে গাজিপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শতাধিক রোগী এ ভাবেই অপেক্ষা করলেন দুপুর ১২টা পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন সকলেই।

Advertisement

মঙ্গলবার দিনভর তালাবন্ধ থাকল আশপাশের প্রায় ১২টি গ্রামের একমাত্র ভরসা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কারণ চিকিৎসক তো দূরের কথা, নার্স কিংবা চতুর্থ শ্রেণির কোনও কর্মীও এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেননি। ফিরে যাওয়ার সময় কাশিমনগরের মমতাজ বিবি, গরিবটোলার জাহানারা খাতুন, বিকলনগরের সোমা দাস, গাজিপুরের সাদেমান শেখেরা বলছেন, ‘‘এর কোনও মানে হয় বলুন তো? সারাদিনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা খোলার লোকও নেই!’’ ১৯৭৭ সালে চালু হওয়া এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একসময় শয্যা সংখ্যা ছিল ৬টি। তিন বছরও না পেরোতেই অন্তর্বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, বহির্বিভাগে কোনও দিন নার্স আসেন, কোনও দিন চিকিৎসক। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গরু চরে। সন্ধ্যের পরে বসে সমাজবিরোধীদের আড্ডা।

কাশিমনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজিবুল শেখ বলেন, “কাশিমনগর, ভোলানাথপুর, শঙ্করপুর, নেজামপুর, আমুহা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা বলতে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভরসা। এখন কোনও মতে বহির্বিভাগ চলছে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মীরা কেউই নিয়মিত আসেন না। ফলে এমন তালাবন্ধ অবস্থা নতুন কিছু নয়।”

Advertisement

জাহানারা খাতুন বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে ঘুরে যাওয়া নতুন অভিজ্ঞতা নয়। কিন্তু কী করব? সবসময় তো আর দূরের বড় হাসপাতালে যাওয়া যায় না। সেই সকালে ছুটতে ছুটতে এসেছিলাম। এখন ফিরে যেতে হচ্ছে।’’ জঙ্গিপুরের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শাশ্বত মণ্ডল বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেন তালাবন্ধ ছিল তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।” বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সুতি ২ বিডিও সন্দীপ ভট্টাচার্যও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন