রেফারে বিরক্ত স্বাস্থ্যভবন

মাস দেড়েক আগেই মুর্শিদাবাদে এসে রেফার নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের নানা প্রশ্ন করেছিলেন স্বাস্থ্যসচিব। কিন্তু রেফার বন্ধ হয়নি। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের দাবি, আগে যেখানে মহকুমা ও ব্লক হাসপাতালগুলি থেকে প্রতি দিন গড়ে ২০-২৫ জন রেফার হত, এখন কমে ৫-৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:০৮
Share:

কোনও দিন ৪০, তো কোনও দিন ৪৫। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ থেকে ‘রেফার’-এর এই হিড়িক দেখে বিরক্ত স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব অনিল বর্মা। কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের এনে তদন্তও করা হয়েছে।

Advertisement

বছরখানেক আগে চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে রোগীকল্যাণ সমিতি সিদ্ধান্ত নেয়, এ বার থেকে রেফার-এর বিষয়টি মনিটরিং করা হবে। স্বাস্থ্যসচিবের প্রশ্ন: জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকেরা রেফার কার্ডে রোগীর ঠিক কী হয়েছে আর কেন তাঁকে রেফার করা হয়েছে তা উল্লেখ করছেন না। মাস দেড়েক আগেই মুর্শিদাবাদে এসে রেফার নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের নানা প্রশ্ন করেছিলেন স্বাস্থ্যসচিব। কিন্তু রেফার বন্ধ হয়নি। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের দাবি, আগে যেখানে মহকুমা ও ব্লক হাসপাতালগুলি থেকে প্রতি দিন গড়ে ২০-২৫ জন রেফার হত, এখন কমে ৫-৬ জনে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যসচিবের বিরক্তি প্রকাশের পরে জেএনএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি ও মেডিসিন বিভাগের দুই সিনিয়র চিকিৎসককে শক্তিনগরে এনে তদন্ত করানো হয়। তাঁরা দেখেন, গত ২১ নভেম্বর ৩৮ জন এবং ১ ডিসেম্বর ৪৭ জনকে কলকাতা ও কল্যাণীতে রেফার করা হয়েছে। বেশ কিছু রোগীর ক্ষেত্রে রেফার করার প্রয়োজনই ছিল না, বরং তাঁদের জেলা হাসপাতালেই চিকিৎসা করা যেত বলে তাঁরা মনে করছেন।

জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকেরা অবশ্য দাবি করছেন, যেখানে একটা আইসিইউ নেই, সিসিইউ থাকলেও শয্যা ১২টি, সেখানে ঝুঁকি নিয়ে রোগী রেখে দেওয়া যায় না। খারাপ কিছু হলে হামলার মুখে পড়েন তাঁরাই। মেডিসিন বিভাগের প্রধান ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, “রোগীর চাপ। লোকবল কম। পরিকাঠামোর ঘাটতিও আছে। বাধ্য হয়ে রেফার করতে হয়।”

Advertisement

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করছেন, “জেলার অন্য হাসপাতাল থেকে মেডিক্যালে এবং সেখান থেকে কলকাতায় রেফার কমেছে।” তাঁর দাবি, নিউরোলজি, কার্ডিওলজি, গ্যাস্ট্রো-এন্ট্রোলজি এবং নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, প্লাস্টিক সার্জারির মতো যে সব ইউনিট তাঁদের নেই, মূলত সেগুলির রোগীদের এবং গুরুতর অসুস্থদের কলকাতায় পাঠানো হয়।

যদিও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা সামান্য চাপ ও ঝুঁকি নিতে রাজি নন। নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের দাবি, “রেফার সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “আমরা চিকিৎসকদের বলেছি, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রেফার করার প্রমাণ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন