মারধরে গ্রেফতার দুই

দুটো লিচু কুড়িয়ে খাওয়ায় জুটল বাঁশের বাড়ি

বৈশাখে গাছ ভরেছে লিচুতে, একেবারে মাটি ছুঁয়ে গিয়েছে। আনমনা ছেলেটি বাগানে ঢুকে তারই দু’টি কুড়িয়ে খেয়েছিল। তাই ‘শাস্তি’ জুটেছিল বাঁশ পেটা।গুরুতর জখম সেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটিকে ভর্তি করানো হয়েছে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

ভগবানগোলা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ১৪:২০
Share:

বৈশাখে গাছ ভরেছে লিচুতে, একেবারে মাটি ছুঁয়ে গিয়েছে। আনমনা ছেলেটি বাগানে ঢুকে তারই দু’টি কুড়িয়ে খেয়েছিল। তাই ‘শাস্তি’ জুটেছিল বাঁশ পেটা।

Advertisement

গুরুতর জখম সেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটিকে ভর্তি করানো হয়েছে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বাহাদুর শেখ নামে বছর দশেকের বালকের হাতের আঙুল ভেঙে গিয়েছে, পাঁজরে রয়েছে চোট। তবে, ভগবানগোলা র কাশিয়াডাঙায়, রবিবার বিকেলের ওই ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা চড়াও হন বাগান মালিক টুটুল শেখের বাড়িতে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। রবিবার রাতে টুটুল ও তার বন্ধু রাঙা শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের, সোমবার লালবাগ এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ভগবানগোলা থানার ওসি উৎপল দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই আমরা ওই গ্রামে গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করেছি।’’

কাশিয়াডাঙা গ্রামে বাহাদুর অচেনা মুখ নয়। স্থানীয় শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সে। এলোমলো ঘুরে বেড়ানো খ্যাপাটে ছেলেটিকে সকলেই পছন্দ করে। নিঃসঙ্গ, ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে এর-তার বাড়ি থেকে পেয়ারা, আম— মরসুমি ফলও কুড়িয়ে খাওয়া তার স্বভাব। তা বলে এমন শাস্তি?

Advertisement

বাহাদুরের দাদা, হজরত বলছেন, ‘‘দু’টো পড়ে থাকা লিচু কুড়িয়ে খেয়েছিল। তার জন্য ভাইকে কিল-চড়-লাথি মেরেও শান্তি হয়নি। ওরা দু’জনে মিলে বাঁশ পেটা করে।’’

খবর পেয়ে ওই বাগানে গিয়ে অচৈতন্য ভাইকে পাঁজকোলা করে তুলে হজরতই তাকে ভর্তি করেন হাসপাতালে। এলাকায় টুটুল শেখের দাপট কম নয়। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘হাঁক ডাক, টাকার গরম সব সময়ই দেখায়। খ্যাপাটে বালককে পেটাতেও তাই কসুর করেনি সে।’’ রবিবারও, তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে শুনে রাতেই দলবল নিয়ে সে চড়াও হয়েছিল। সামনে পড়েছিল, বদুজ্জমানের বাড়ি। সেখানে চড়াও হয়ে ভাঙচুরও চালায় তার দলবল বলে অভিযোগ। তবে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। গ্রামবাসীরা এক জোট হয়ে বাধা দিলে পিছু হটেছিল টুটুলের লোকজন।

কিন্তু, হাজতবাস সেরে ফিরে এসে ফের যদি দৌরাত্ম্য শুরু করে? গ্রামবাসীরা বলছেন, ঢের হয়েছে। এ বার কাশিয়াডাঙা এক জোট হয়েছে। বাহাদুরের পরিণতি রুখতে এ বার তাঁরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘আর না ঢের হয়েছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন