লোভের পারদ চড়তে থাকায় সুদের ব্যবসায় টাকা ঢালতে গিয়ে ফেঁসে গিয়েছিল জগবীর খুনে ধৃত সোমা মজুমদার। আর সে সুতোয় জড়িয়ে গিয়ে পরিত্রাণ পেতেই এই খুনের ছক কষে সে। ধৃতদের জেরা করে এমনই তথ্য হাতে পেয়েছে পলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, চুঁচুড়ার বাসিন্দা সোমা মজুমদার ১৭ বছর আগে বিয়ে করে স্বামীর সঙ্গে দিল্লি চলে যায়। সেখানে এই মহিলা জমি বেচাকেনা ও নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
ব্যবসায় টাকা ঢালার পাশাপাশি সে বিভিন্ন ব্যবসায় মোটা সুদে টাকা ধার দিতে শুরু করে। আর তা করতে গিয়ে এক সময়ে টাকার ‘নেশা’য় পেয়ে বসেছিল তাকে। শুধু দিল্লি নয়, সঙ্গী উৎপলকে দিয়ে এ রাজ্যেও নানান জায়গায় সুদের টাকা খাটাতে শুরু করেছিল সোমা।
এই ব্যবসায় তার পুরনো চেনা জানা নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়েছিল উৎপল। উৎপল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মাণ শ্রমিক সরবরাহ করে। দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ধৃত কৃষ্ণ বিশ্বাস তার সংস্থায় নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে বেশ কিছু দিন কাজ করেছে। কৃষ্ণ বিশ্বাস উৎপলের সঙ্গে দিল্লি, নাসিক-সহ একাধিক জায়গায় কাজ করেছে।
সেই সূত্রে তাদের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠতাও তৈরি হয়। সেই লাভের টাকা ভাগ নিতে এর আগেও দক্ষিণপাড়ায় এসেছে উৎপল। কৃষ্ণর সঙ্গেই তারা প্রথমে খুনের ছক কষে। রফা হয় এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকায় কাজ হাসিল করতে হবে। সেই মতো পরিকল্পনা করে ১৫ মে জগবীর সিংহকে বগুলায় নিয়ে এসে অটোতে তুলে হলদিপাড়া-গয়েশ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর ‘কাজ’ শেষ করে যে যার মতো গ্রামে ফিরে যায়।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, জগবীরকে খুনের উদ্দেশেই ডেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে গাড়িতে উৎপল তাঁকে নিযে যান বগুলায়। আরও একটি বিষয় ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রথমে ধারা পড়ার পরে উৎপল ও সোমা নিজেদের ভাইবোন বলে পরিচয় দিয়েছিল। পরে তারা জানায়, তারা ভাইবোন নয়। ব্যবসার কাজে নেমেই আলাপ। তাহলে এমন মিথ্যে তারা বলল কেন, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।