নিশ্চিহ্ন মসজিদের পিছনের দেওয়াল। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
ভাঙনের জেরে ধসে গেল মসজিদের পিছনের দেওয়াল! ধুলিয়ানের লালপুরে মসজিদের ওই অংশটি শনিবার মাঝরাতে গঙ্গায় তলিয়ে যায়। মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরে ফের সামনে এল ধুলিয়ানে ভাঙন-চিত্র। ইতিমধ্যেই রাজ্য সেচ দফতর মসজিদ লাগোয়া এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে। দিন সাতেকের মধ্যে সে কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু পাকা দেওয়াল নদীতে ধসে পড়ায় আগামী সাত দিন মসজিদটি টিকে থাকবে কি না তা নিয়েও আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।
শনিবার মাঝ রাতে দেওয়াল ভেঙে পড়ার শব্দে এলাকার কয়েক’শো মানুষ ছুটে আসেন মসজিদে। তাঁর ভাঙন নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের গড়িমসির জন্যে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। মাস খানেক ধরেই ধুলিয়ানের এই এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন চলছে। ইদের দিনে ভাঙনের আতঙ্কে বাইরে পাহারা বসিয়ে ওই মসজিদে দু’ফায় নামাজের আয়োজন করতে হয়েছিল। মসজিদের ইমাম মৌলবী রুহুল আমিনের অভিযোগ, ‘‘গঙ্গার ভাঙনে বিপন্ন মসজিদের রক্ষায় বারবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো সত্ত্বেও ভাঙনের হাত থেকে মসজিদকে রক্ষায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, সকলে এক সঙ্গে মসজিদে ঢুকে নামাজ পড়তেও ভয় পাচ্ছেন।
রবিবার সকাল থেকে মসজিদের পুরো দেওয়াল ধসে পড়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই মসজিদেই একটি মক্তব রয়েছে। প্রায় দেড়শো ছাত্র পড়াশোনা করে সেখানে। আতঙ্কে তারাও। মসজিদ থেকে জিনিস পত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, শুধু মসজিদ নয় গঙ্গাপাড়ের প্রায় ৪০০ পরিবার একই ভাবে ভাঙনের কবলে রয়েছেন। এলাকার গঙ্গা ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ, তা মানছেন সেচ দফতরের ভাঙন প্রতিরোধ শাখার কর্তারাও। রঘুনাথগঞ্জের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাঙন ঠেকাতে ওই মসজিদের সামনে বেড়া দেওয়া হয়েছিল। না হলে বহু আগেই মসজিদটি ভাঙনের কবলে পড়ত।’’ সেচ দফতর মসজিদ লাগোয়া এলাকার ভাঙন ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে বলে তিনি জানান। তাঁর কথায়, ‘‘টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। দিন সাতেকের মধ্যেই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’ আশার কথা শুনিয়েছেন গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ দফতরের মুর্শিদাবাদের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র জয়ন্ত দাস। তিনি বলেন, ‘‘ভাঙন রুখতে কাজ শুরুর জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। দু’তিন দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করা যাবে।’’
এ দিন নামাজের পর এলাকার বিশিষ্ট জনেরা ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে মসজিদে আলোচনায় বসেন। তাঁদের প্রশ্ন, মক্তব চলাকালীন অঘটন ঘটলে কী হবে?