ছেলের মৃত্যুতে মার ডাক্তারকে, পাল্টা চড়

ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। অথচ বার বার ডাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক আসেননি। তার ঘণ্টা খানেক পরেই ছেলের মৃত্যু হয়। তারপর চিকিৎসক আসেন। মহিলার অভিযোগ, সঠিক চিকিৎসা হলে তাঁর ছেলের প্রাণ যেত না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৬ ০২:০৭
Share:

ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। অথচ বার বার ডাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক আসেননি। তার ঘণ্টা খানেক পরেই ছেলের মৃত্যু হয়। তারপর চিকিৎসক আসেন। মহিলার অভিযোগ, সঠিক চিকিৎসা হলে তাঁর ছেলের প্রাণ যেত না। চিকিৎসককে দেখেই ওই মহিলা হাতপাখা দিয়ে চিকিৎসককে মারেন। চিকিৎসকও তৎক্ষনাৎ ওই মহিলাকে সপাটে চড় মারেন। বুধবার রাতে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের ঘটনা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধায় বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগেরও তদন্ত করা হচ্ছে।’’

Advertisement

নবগ্রামের নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের পূর্বগ্রামে বাড়ি বছর পঁয়ত্রিশের জিয়াউল শেখের। পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে জিয়াউল বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ সাইকেলে চেপে কাজে বার হন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পলসণ্ডা মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর একটি ছোট গাড়ির ধাক্কায় তিনি জখম হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসক দীপঙ্কর কুণ্ডুর তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকৎসা শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়। জিয়াউলের মামা মফিক শেখ জানান, ওই সব রিপোর্ট সন্ধ্যা নাগাদ তৈরি হলেও, চিকিৎসক তা দেখেননি। তিনি সন্ধ্যার পর থেকে ভাগ্নেকে ছুয়েও দেখেননি। বার বার নার্সদের মাধ্যেমে খবর দেওয়া হলেও তিনি আসেননি।

ওই যুবকের মা আরফা বিবি ছেলের কষ্টের কথা চিকিৎসক ও নার্সদের জানান। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরা বার বার ওই মহিলাকে ফিরিয়ে দেন। আরফা বিবি বলেন, ‘‘ছেলে ছটপট করছে দেখে সন্ধ্যা থেকে আমি নার্সদের কাছে ছুটে গিয়ে একাধিকবার জানাই। নার্সরা বলেন, চিকিৎসকদের বলতে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি বলেন, নার্সদের বলতে। এই ভাবে ঘণ্টা দুয়েক ধরে ছেলে ছটপট করে মারা যায়।’’

Advertisement

অভিযোগ, রাত সা়ড়ে ৯টা নাগাদ অন্য এক চিকিৎসক, চন্দ্রপ্রকাশ শর্মা জিয়াউলকে দেখতে আসেন। ততক্ষণে অবশ্য তিনি মারা গিয়েছেন। এরপরই আরফা বিবি হাতপাখা দিয়ে ওই চিকিৎসককে মারেন। চিকিৎসকও তাঁকে পাল্টা চড় কষান।

ওই ওয়ার্ডের অন্য রোগীরাও জানাচ্ছেন, ঘণ্টা দু’য়েক ধরে নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ওই মহিলা বার বার গেলেও তাঁরা কেউই আসেননি। প্রায় বিনা চিকিৎসায় জিয়াউল মারা যায়। মায়ের চোখের সামনে
ছেলে বিনা চিকিৎসায় মারা গেলে, তাঁর মনের অবস্থা হয় এক জন চিকিৎসকের অনুভবে করা উচিৎ। চিকিৎসককে হাতপাখা দিয়ে মারার ঘটনা সমর্থন না করেও ওই ওয়ার্ডের কয়েক জন রোগী জানান, চিকিৎসকের চড় মারার ঘটনাও খুবই নিন্দনীয়। চর মারায় অভিযুক্ত চন্দ্রপ্রকাশবাবুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement