দড়িটার হুক ছিল সাগরের প্যান্ট-পকেটে

পেরিয়ে গিয়েছে তিন দিন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর পড়ুয়া সাগর মণ্ডলের মৃত্যু রহস্যের কিনারা হল না।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০২:০৫
Share:

পেরিয়ে গিয়েছে তিন দিন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর পড়ুয়া সাগর মণ্ডলের মৃত্যু রহস্যের কিনারা হল না।

Advertisement

সাগরের বাবা তাঁর তিন সহপাঠীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে, আত্মহত্যার তত্ত্বই জোরালো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তিন অভিযুক্তের কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।

সোমবার হরিণঘাটার মোহনপুরে আইসার ক্যাম্পাসের মধ্যে হস্টেলের একটি অব্যবহৃত শৌচাগারে সাগরের ঝুলন্ত দেহ মেলে। বছর কুড়ির সাগর বিএস-এমএস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, তফসিলি কোটায় ভর্তি হওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হত।

Advertisement

এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল তৈরি করেছে পুলিশ। এ দিন তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার মধ্যে তিন অভিযুক্তও রয়েছে। যেহেতু জাতপাত নিয়ে অভিযোগ হয়েছে, তাই পুলিশ তফসিলি জাতি এবং জনজাতিভুক্ত সব পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউ জাতপাত নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ করেননি। তবে সাগরের এক আত্মীয়ের সন্দেহ, চাপ থাকাতেই ওই ছাত্রছাত্রীরা আসল ঘটনা জানাতে পারছেন না।

পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের হাতে বেশ কিছু নতুন তথ্য এসেছে। সাগরের পরিবারের অভিযোগ ছিল, যেখানে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মিলেছে, সেখানে এমন কিছু ছিল না, যাতে উঠে তিনি গলায় দড়ির ফাঁস দিতে পারেন। তদন্ত কিন্তু বলছে, যেখানে সাগরের দেহ মিলেছে, তার পাশের একটি কার্নিশে তাঁর পায়ের স্পষ্ট ছাপ মিলেছে। যে দড়ি দিয়ে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন, সেটিতে হস্টেলে ঘরে তাঁর জামাকাপড় ঝোলানো থাকত। সেই দড়ির হুক তাঁর প্যান্টের পকেটেই পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, তিনিই দড়িটি খুলে এনেছিলেন বলে পুলিশের অনুমান।

আইসার নিজে যে তদন্ত কমিটি গড়েছিল তার রিপোর্ট ইতিমধ্যে জমা পড়ে গিয়েছে। এ দিনই তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে। আইসার-এর পক্ষ থেকে অধ্যাপক অরিন্দম কুন্দগ্রামী বলেন, ‘‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। কিন্তু কমিটি এই ঘটনায় তেমন কিছু খুঁজে পায়নি, যাতে মনে হতে পারে এই আত্মহত্যায় কারও ইন্ধন বা প্ররোচনা ছিল। ও যথেষ্ট মেধাবী ছিল। ইংরেজিতে ওর যা জ্ঞান ছিল, তার থেকে অনেক কম ইংরেজি জেনে অনেক পড়ুয়া এখানে ভাল ভাবে পড়াশোনা করছে। কোথাও কোনও যোগাযোগের অভাব ছিল কি না, তা আমরা খুঁজে দেখছি।’’

এ দিন সকালেই তৃণমূলের হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ হরিণঘাটার ফতেপুর গ্রামে সাগরদের বাড়িতে যান। পরে সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি মধুজা সেন রায়েরাও গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন