আদালতে ধৃত গোপাল ঘোষ। ছবি: প্রণব দেবনাথ
পুকুর থেকে গুলি-বন্দুক পাওয়া গেলেও আততায়ী এখনও নাগালের বাইরে। কার্তিক বিশ্বাস খুনে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সোমবার জানাল পুলিশ। তবে সে যে গুলি চালায়নি, সেটাও তারা পরিষ্কার করে দিয়েছে।
লাল ফুল-হেলমেট পরে কে গুলি চালিয়েছিল গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে? কেন তাকে পুলিশ ধরতে পারছে না? সে কি জেলারই দুষ্কৃতী, নাকি বাইরে থেকে এসেছিল? মহাষষ্ঠীর রাত পর্যন্ত সেই প্রশ্নের সদুত্তর পুলিশ দিতে পারেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম গোপাল ঘোষ। তার বাড়ি কৃষ্ণনগরের মহীশালপাড়া এলাকায়। পুলিশের দাবি, তাকে রবিবার রাতে তাকে বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ধরা পড়া ওষুধের স্টকিস্ট পিন্টু ভট্টাচার্যের খুবই ঘনিষ্ঠ সে। তবে তার ভূমিকা ঠিক কী ছিল, পুলিশ তা ভেঙে বলেনি।
কৃষ্ণনগরের চুনুরিপাড়া লেনে চিকিৎসক কুমদরঞ্জন বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে ফিরে তাঁর সামনেই আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছিলেন কার্তিক। তাঁর পরিবারের লোকেদের সন্দেহ, খুনি চিকিৎসকের পরিবারের কাছের লোক এবং কুমুদরঞ্জন তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন। তবে কুমুদরঞ্জন অবশ্য পুলিশেকে জানিয়েছেন, তিনি খুনিকে চিনতে পারেননি। তাঁর দুই ছেলেকে ডাকা হলেও এ পর্যন্ত তাঁকে থানায় ডেকে জেরা করা হয়নি।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ওষুধের কমিশন নিয়ে গোলমালের জেরেই কুমুদরঞ্জনের ঘনিষ্ঠ ওষুধের দালাল কার্তিককে খুনের ছক কষা হয়েছিল। তদন্তে নেমে কার্তিকের প্রতিদ্বন্দ্বী এক ওষুধের দালাল সাগর নাথ ওরফে বাবনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে পিন্টুকে ধরা হয়। এর পরে আর পুলিশ বিশেষ এগোতে পারছিল না। তাদের ভূমিকা নিয়ে জেলার সর্বস্তরে প্রশ্ন উঠতে থাকে।
রবিবার ভোরে কৃষ্ণনগরের একটি পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। তখনই শোনা গিয়েছিল, এক সন্দেহভাজনকে ধরার তোড়জোড় চলছে। শেষমেশ এ দিন গোপালকে ধরার কথা জানান পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। তাকে কৃষ্ণনগর আদালতে তুলে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছিল পুলিশ। আদালত সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।
পুলিশকর্তাদের দাবি, গোপাল কৃষ্ণনগর শহরের ‘উঠতি অপরাধী’। পিন্টুর দীর্ঘদিনের বন্ধু। ওষুধের ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে পিন্টুর সঙ্গে তার যোগ ছিল। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতদের জেরা করেই আমরা গোপালের নাম জানতে পারি। জেরাতেই তার ভূমিকা স্পষ্ট হবে।” আসল খুনি কি চিহ্নিত হয়েছে? ‘তদন্তের স্বার্থে’ সুপার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।