কন্যাহন্তা বাবার হদিসই মেলেনি

জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধু গ্রাম নয়, আব্বাস আলি নামে ‘খুনি’ বাবার খোঁজে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে হানা দিয়েছিল পুলিশ। খোঁজ করা হয়েছে তার বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সালার শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১০
Share:

কন্যা-হন্তা বাবার খোঁজে সোমবার দিনভর তল্লাশি সত্ত্বেও খোঁজ মিলল না তার। তার জেরেই সরমস্তিপুরের প্রশ্ন— পুলিশ গা লাগিয়ে খোঁজ করছে তো! জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধু গ্রাম নয়, আব্বাস আলি নামে ‘খুনি’ বাবার খোঁজে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে হানা দিয়েছিল পুলিশ। খোঁজ করা হয়েছে তার বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও।

Advertisement

মহকুমাশাসক অভীককুমার দাস ওই ঘটনার পরে এলাকায় নতুন করে প্রচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ভাবে অভিযুক্ত আব্বাস আলি কিংবা তার পরিবারের কাউকে রেয়াত করা হবে না। স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশকে সাহায্য করুক।’’

তিনি মনে করেন, সালারের ওই ঘটনা, সমাজে মেয়েদের অবস্থান এবং কন্যা সন্তানের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বড় স্পষ্ট করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই নৃশংস ঘটনাটি চোখে আঙুল দিয়ে যেন দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা কোথায় রয়েছি!’’স্বাস্থ্য দফতরকে তাই এলাকায় নতুন করে প্রচার করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে এ দিন দাবি করা হয়েছে, জেলার প্রান্তিক এলাকায় এখনও সচেতনতা যে শূন্যের নিচে, এ ঘটনা থেকে তা পরিস্কার। মেয়ে হলেই মুখ ভার, কপালে ভাঁজ যেন নিয়ম করা প্রথা হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতাও খুঁজে পান না অনেকে। সেই সুরে অভীকবাবুও বলছেন, ‘‘কন্যা সন্তান হলে তাকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও আকছার ঘটছে। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন বোধহয় এই হিংস্র খুনের ঘটনা।’’ এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরকেও প্রচারে নামতে হবে বলে মনে করছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। নিতে হবে বাড়তি উদ্যোগ। আজ, মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের দফতরে উন্নয়ন-বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।

সরমস্তিপুরের আব্বাসের প্রথম সন্তান ছিল কন্যা। ছ’মাস আগে দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় স্ত্রী আমিনার উপরে শুরু হয়েছিল অত্যাচার। দিন কয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিল ছ’মাসের ফারহা। আমিনা মেয়ের ওষুধ কেনার টাকা চাইলে শুক্রবার মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে উঠোনে আছড়ে মারে আব্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন