Murshidabad

Murshidabad: রোগী পরিজনদের সঙ্গে হাতাহাতি! কর্মবিরতিতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা

জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করতে অপরাগ। যত ক্ষণ না দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হয়, তত ক্ষণ কর্মবিরতি চলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২২ ১০:৩৫
Share:

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা। নিজস্ব চিত্র।

আবার চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ! এক মহিলা জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর এবং হেনস্থার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিল জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। ফলত বিপাকে পড়েছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আগত রোগীরা।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার দুপুরে। দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রোগীর পরিজনের অভিযোগ, মাথায় এবং হাতে গুরুতর চোট থাকা সত্ত্বেও চটজলদি ছেড়ে দেওয়া হয় রোগীকে। বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও ড্রেসিং করানো হয়নি। এ নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি, পরে দায়িত্বে থাকা এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের শল্য বিভাগের সামনে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এর পর ওই রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বহরমপুর থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ।

জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের তরফে আকাশদীপ ঘোষ বলেন, “শনিবার মধ্যরাতে দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় সকাল ১০টা নাগাদ ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে রোগীর পরিজনরা চিকিৎসকদের হেনস্থা করেছেন।” আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তার অভিযোগ করেছেন, তাঁর উপর ১০জনের একটি দল আক্রমণ চালিয়েছে।যদিও চিকিৎসকদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ওই রোগীর পরিবার। তাঁদের দাবি, নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে এখন মারধরের গল্প ফাঁদছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা উল্টে ওই মহিলা জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

পরিবারের দাবি, রোগীর মাথায় চোট ছিল। কোনও রকম ‘ড্রেসিং’ না করে রোগীকে ছুটি দেওয়া হয়। তখনও তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপই ছিল। তাঁরা বার বার অনুরোধ করেন ড্রেসিংয়ের জন্য। কিন্তু জানিয়ে দেওয়া হয়, ছুটি দিয়ে দেওয়ার পর আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। অন্য হাসপাতালেও যেতে বলা হয়। তাঁদের অভিযোগ, কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসককে বার বার অনুরোধ করা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। সহকর্মীদের সঙ্গে গল্পে মশগুল ছিলেন তিনি। এর পর কথা কাটাকাটি হয়। তবে গায়ে হাত তোলার কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে তাঁরা দাবি করেছেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়, যত ক্ষণ না আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তত ক্ষণ কর্মবিরতি চলবে। মধ্যরাত থেকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে অবস্থানে বসেন তাঁরা। তাঁরা জানান, এমন আক্রমণের ঘটনা নতুন নয়। বার বার এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করতে পারবেন না।এই ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজের সুপার একে বেরা জানান, তিনি বিষয়টি পুরোপুরি জানেন না। সব কিছু জানার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশ অবশ্য দাবি করেছেন, দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। মিটমাট হয়ে গিয়েছে। কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার কাজে যোগও দিয়েছেন।

যদিও সোমবার সকালেও অবস্থানে বসে থাকতে দেখা যায় জুনিয়র ডাক্তারদের। তাঁদের অভিযোগ, বার বার চিকিৎসক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ। এ ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করতে পারবেন না। যত ক্ষণ না দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হয়, তত ক্ষণ এই কর্মবিরতি চলবে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন