Madhyamik

Talented girl: মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফল, অনাথ আশ্রমে বড় হওয়া মেহবুবন্নেসার লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া

বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে অনাথ আশ্রমে থাকতে শুরু করেন মেহবুবন্নেসা। মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফলের পর অনাথ আশ্রমে উৎসবের আবহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ১৭:১৮
Share:

নিজস্ব চিত্র।

এক দশক আগে বাবার মৃত্যুর পর মায়ের হাত ধরেই আশ্রমে প্রবেশ করেছিলেন অনাথ মেহবুবন্নেসা। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ওই অনাথ আশ্রমে তাঁর মা পেয়েছিলেন রাঁধুনির কাজ। আশ্রমের এক চিলতে ঘরে মাথা গুঁজে মায়ের অনুপ্রেরণায় শুরু হয়েছিল লড়াই। পড়াশুনো করে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার প্রথম ধাপে সাফল্যের সঙ্গে উতরে গিয়েছে মেহেবুবন্নেসা। তার চোখধাঁধানো ফলাফলে লড়াইয়ের প্রেরণা খুঁজবে আরও অনেকে।

Advertisement

হরিহরপাড়া টেংরামারি অনাথ আশ্রমের পরিচালকমণ্ডলী থেকে শুরু করে প্রত্যেক আবাসিক খুশিতে মেতেছেন। তাঁদের প্রিয় সন্তান সাফল্যের সঙ্গে মাধ্যমিক পাশ করেছে। আশ্রম জুড়েই কার্যত উৎসবের মেজাজ। যাকে ঘিরে এত কিছু সেই মেহবুবন্নেসা বলছে, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের পর ডাক্তারি পড়তে চাই। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হতে চাই। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’

ছোট্ট মেয়েটির পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে তাকে স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয় বহরমপুরের হরিহরপাড়া অনাথ আশ্রম কর্তৃপক্ষ। আশ্রম কর্তৃপক্ষের সেই চেষ্টা বিফলে যায়নি। অনাথ আশ্রম থেকে মাধ্যমিকে ৬৩২ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে মেহেবুবন্নেসা।

Advertisement

মেহবুবন্নেসার পৈতৃক বাড়ি বহরমপুরের টিকটিকি পাড়া এলাকায়। ছোট বয়সে মেহবুবন্নেসার বাবার মৃত্যু হয়। সেই সঙ্গেই সংসারে নেমে আসে তীব্র আর্থিক অনটন। বাধ্য হয়ে মেয়ের হাত ধরে হরিহরপাড়ার আশ্রমে চলে আসেন জাহেদা খাতুন। মেহবুবন্নেসা তখন পাঁচ। মা জাহেদা বলেন,‘‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে বড় হয়েছে মেয়ে। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। ওর সাফল্যে আমিও গর্বিত। বড় হয়ে আমার মতো অসহায় মেয়েদের পাশে দাঁড়ালে আরও খুশি হব।’’ চমকপ্রদ ফলাফল করলেও মেধাতালিকায় জায়গা না হওয়ায় আক্ষেপ রয়ে গেছে। আরও ভাল পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিকে সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চায় হরিহরপাড়া অনাথ আশ্রমের কৃতী পড়ুয়া মেহবুবন্নেসা। অনাথ আশ্রমের প্রধান কর্ণধার আইজুদ্দিন জানান, ‘‘মেয়েটির ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব ঝোঁক। তা দেখে স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। সে দিনের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না আজকের ফলে তা প্রমাণিত। ওর লড়াইয়ে সঙ্গে আছি। আমরা চাই মেহবুবন্নেসা মানুষের মতো মানুষ হোক।’’ মেহবুবন্নেসার কৃতিত্বে গর্বিত স্থানীয় এক শিক্ষক তাঁকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন