বাড়ি থেকে পালিয়েও ফিরল ছেলে, চিন্তায় মা

গত অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ নবদ্বীপের হিন্দুস্কুলের পঞ্চম শ্ৰেণির ছাত্র সেই আয়ুষ দেবনাথ হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছিল। এই প্রথম অবশ্য এমন হল তা নয়। অতীতেও কয়েক বার বাড়ি ছাড়ার নজির রয়েছে তার। ৯ তারিখ বছর আটেকের ছোট বোন নিশার সঙ্গে খেলতে-খেলতে হঠাৎ যেন বাতাসে উবে যায় এগারো বছরের ছেলে। কাঁদতে-কাঁদতে বাড়ি ফিরে নিশা বলেছিল, ‘‘দাদা তো নেই। চলে গিয়েছে!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩২
Share:

আয়ুষ দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র

নিজের শর্তে থাকতে ভালবাসে সে। পড়াশোনায় মন নেই। যা তার মন ছুঁয়ে যায় তার পিছু পিছু নিরুদ্দেশের পথে হাঁটা দিতে দু’বার ভাবে না। পিছনে পড়ে থাকে নিজের বাড়ি, বাবা-মা, আত্মীয়পরিজন। সে জন্ম-বাউন্ডুলে, দুরন্ত, খামখেয়ালি। হারিয়ে ফিলে এলেও তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না মা-বাবার।

Advertisement

গত অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ নবদ্বীপের হিন্দুস্কুলের পঞ্চম শ্ৰেণির ছাত্র সেই আয়ুষ দেবনাথ হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছিল। এই প্রথম অবশ্য এমন হল তা নয়। অতীতেও কয়েক বার বাড়ি ছাড়ার নজির রয়েছে তার। ৯ তারিখ বছর আটেকের ছোট বোন নিশার সঙ্গে খেলতে-খেলতে হঠাৎ যেন বাতাসে উবে যায় এগারো বছরের ছেলে। কাঁদতে-কাঁদতে বাড়ি ফিরে নিশা বলেছিল, ‘‘দাদা তো নেই। চলে গিয়েছে!’’ কিন্তু দাদা কোথায়, কার সঙ্গে গিয়েছে তা বলতে পারেনি সে। পরের দিনই অবশ্য ছেলের খোঁজ মিলেছিল বিহারের সাহারসা স্টেশন থেকে। জিআরপি মারফত সে পৌঁছে গিয়েছিল বিহারের লক্ষ্মীচক চৌপট্টি চাইল্ড লাইনের হাতে। পাঁচ দিনের মধ্যে তাকে সেখান থেকে পিসির বাড়ি জলদা পাড়ার মাদারিহাটে নিয়ে যান বাবা মদনগোপাল দেবনাথ। বৃহস্পতিবার মা কাকলি দেবনাথ তাকে নবদ্বীপে নিয়ে আসেন। তার পরে নিয়ে যান থানায়।

সেখানে আয়ুষ জানিয়েছে, একঘেঁয়ে জীবন আর গৃহশিক্ষকের পড়ার চাপ সহ্য করতে না পেরেই গত অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বিষ্ণুপ্রিয়া হল্ট স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে সে বেরিয়ে পড়েছিল। ট্রেনে করে সে পৌঁছে যায় বিহারের সাহারসা ষ্টেশনে। সেখানে তাকে উদেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে জিআরপি-র লোক ধরে চাইল্ড লাইনে পৌঁছে দেয়। তার কাছ থেকে বাবা-র ফোন নম্বর জেনে ফোনও করে দেয়।

Advertisement

নবদ্বীপ মালঞ্চপাড়ার আয়ুষ বরাবরই একটু অন্য রকম। রাস্তাঘাটে কোনও কিছু দেখে ভাল লাগলে বা কোনও মানুষকে আকর্ষণীয় মনে হলে তার মন সে দিকে ছুটতে থাকে। কোনও পিছুটান আর তাকে আটকে রাখতে পারে না। নতুনকে আবিষ্কারের টানে সে পায়ে পায়ে চলতে শুরু করে। পরিচিতদের কাছে সে যেন রবীন্দ্রনাথের অতিথি গল্পের সেই তারাপদ, কিম্বা ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’র সেই কিশোর। মা-বাবার তাই বুক ঢিপঢিপ। বাইরের টানে আবার না কোনও দিন হাঁটা দেয় আয়ুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন