সন্ধে তখন প্রায় সাড়ে ছ’টা। বর্ণপরিচয় ভবনে অবহেলায় পড়ে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মূর্তি।
দিনভর জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে শুরু করে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিন পালন হল। কিন্তু জেলা সদর কৃষ্ণনগরে খোদ বিভিন্ন শিক্ষাদফতরের অফিস ‘বর্ণপরিচয় ভবন’ চত্বরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মূর্তিতে মালা দেওয়া তো দূরে থাক, সারা দিন ঘুরেও তাকালেন না কেউ। কেন?
নদিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় জোর গলায় বলছেন, “কেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে তো আমরা ২১ জুলাই স্মরণ করি।’’
তবে ভুল যে একটা হয়ে গিয়েছে, বুধবার সকালে তা অবশ্য কবুল করেছিলেন রমাপ্রসাদ। জিভ কেটে জানিয়েছিলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন স্কুলে অনুষ্ঠান হয়েছিল। এ দিন সেখানে ব্যস্ত ছিলাম। ভুল করে বর্ণপরিচয় ভবনে দ্বিজেন্দ্রলালের মূর্তিতে আর মালা দেওয়া হল না!”
কৃষ্ণনগরের দ্বিজেন্দ্র পাঠাগারে চলছে অনুষ্ঠান।
এই ‘বর্ণপরিচয় ভবনে’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অফিস থেকে শুরু করে জেলা স্কুল পরিদর্শক(মাধ্যমিক) ও (প্রাথমিক)-এর অফিস। জেলা গ্রন্থাগারিক আধিকারিকের অফিস রয়েছে। এতগুলি অফিস থাকা সত্ত্বেও ‘বর্ণপরিচয় ভবনের’ সামনে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মূর্তিতে একটি ফুলও দিলেন না কেউ।
ওই সব অফিসের আধিকারিকরা অবশ্য এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন এমনটা হওয়া উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তা-ও তাঁরা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
নদিয়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মিতালি দত্তও বলেছেন, “আমি এ দিন একটু অন্য কাজে ব্যাস্ত ছিলাম। তা ছাড়া আমাদের অফিসের কর্মী সংখ্যাও কম। ফলে বিষয়টি নজর এড়িয়ে গিয়েছে। আর যাতে এ রকম না হয়, দেখব।” জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মিত্র অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
অন্য দিকে এ দিন কৃষ্ণনগরে নানা সংস্থার উদ্যোগে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ১৫৪তম জন্মদিন পালন হল। কৃষ্ণনগরের স্টেশনরোডে দ্বিজেন্দ্র পাঠাগারের উদ্যোগে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার দিনভর নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। সকালে দ্বিজেন্দ্র পাঠাগার চত্বরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের পূর্ণাবয়ব মুর্তির উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায়।
ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য