নালিশ জানান ঘরে বসে

পুজোয় চালু নতুন অ্যাপ

নদিয়া জেলা প্রশাসন ঠিক করে ফেলেছে, এ বার আর বিচারকেরা নয়, সেরা পুজো বাছবে আমজনতা। তাদের ভোটেই ঠিক হবে কোন পুজো কী ক্ষেত্রে অন্যদের ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার জন্য চালু করা হয়েছে ‘নদিয়া উৎসব’ নামে অ্যাপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

পুজো চলে এসেছে দোরগোড়ায়, এসে গিয়েছে পুজোর অ্যাপও।

Advertisement

হাতে স্মার্টফোন থাকলেই হল, গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে টুক করে। নদিয়ায় অ্যাপের কেন্দ্রে উৎসব, মুর্শিদাবাদে পুলিশি তৎপরতা।

নদিয়া জেলা প্রশাসন ঠিক করে ফেলেছে, এ বার আর বিচারকেরা নয়, সেরা পুজো বাছবে আমজনতা। তাদের ভোটেই ঠিক হবে কোন পুজো কী ক্ষেত্রে অন্যদের ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার জন্য চালু করা হয়েছে ‘নদিয়া উৎসব’ নামে অ্যাপ। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “আমরা চাইছি, সমস্ত মানুষ উৎসবে একাত্ম হয়ে যান। তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা সেই চেষ্টাও করছি।”

Advertisement

মুর্শিদাবাদে শনিবার সকালেই উদ্বোধন হয় ‘আলোর পথে’ নামে পুলিশের একটি অ্যাপের। কর্তাদের দাবি, তা থেকে সরাসরি জেলা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করা যাবে। কাছাকাছি থানার লোকেশনও বোঝা যাবে। মহিলারা সাহায্যের জন্য এসএমএস করতে পারেন, লোকেশন শেয়ারও করতে পারেন। সব ধরনের অভিযোগই করা যেতে পারে।

জঙ্গি কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে নাম-ঠিকানা ভাঁড়িয়ে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার রেওয়াজ আছে সর্বত্রই। বহু ক্ষেত্রে বাড়ির মালিক হয়তো গোড়ায় কিছু বোঝেন না, কিন্তু পরে তাঁর সন্দেহ হতে থাকে। সে ক্ষেত্রে তিনি বাড়িতে বসেই ভাড়াটেদের সব রকম তথ্য পুলিশকে জানাতে পারেন। ‘প্যানিক’ বলে একটি বোতাম আছে, যাতে চাপ দিলে নাগরিকের লোকেশন পুলিশ কন্ট্রোল রুমে পৌঁছে যাবে। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন থেকে শুরু করে দীর্ঘক্ষণ থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগ জানানো, সব প্রয়োজনই মেটানো যাবে এই অ্যাপ মারফত। এ দিন বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘ফোন নম্বর ও ঠিকানা দিয়ে কেউ অ্যাপ-এ অভিযোগ জানালেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ সুপারের মতে, “এখন রাস্তায় ইভটিজিং কমে গিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে অপরাধ বেশি হচ্ছে। ফোনে বিরক্ত করা কিংবা ছবি তুলে পোস্ট করার ঘটনা ঘটছে। আমরা সে সব রোখার চেষ্টা করছি।” তবে প্রতিবারই পুজোর সময়ে খুচরো উৎপাত বাড়ে। সম্ভবত, সে কথা মনে রেখেই পুজোর ঠিক আগে অ্যাপ চালু করেছে পুলিশ। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “এটা সত্যিই খুব ভাল উদ্যোগ।” মেডিক্যাল কলেজের সহ-অধ্যক্ষ তথা সুপার সুহৃতা পাল বলেন, “মেয়ে কলকাতায় পড়তে যায়। বাড়ি ফিরে ফোন না করা পর্যন্ত মন ঠিক থাকে না। শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, আমি চাই সারা রাজ্যে এই অ্যাপ চালু হোক।” অ্যাপের উপযোগিতা নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রও দেখানো হয় অনুষ্ঠানে। নদিয়ার অ্যাপটিতে অবশ্য এত উপযোগিতা নেই, এত দীর্ঘমেয়াদিও নয় সেটির উদ্দেশ্য। বরং তা অনেক বেশি পুজোকেন্দ্রিক। এতে থাকছে কোন এলাকায় কোন মণ্ডপের কী থিম, সেখানে যেতেই বা হয় কী করে। পাশাপাশি পছন্দের পুজোকে ভোট দিতে পারবেন দর্শকেরা। সেই ভোটের নিরিখেই ব্লক, পুরসভা ও জেলা স্তরে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরাকে পুরস্কার দেবে প্রশাসন। নদিয়া জেলা পরিযদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় বলেন, “পুরস্কার নিয়ে যাতে কোনও রকম বিতর্ক না হয়, তার জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।”

ঠিক হয়েছে, নদিয়ায় ব্লক ও পুরসভা স্তরে প্রথম পুরস্কার ৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ৩ হাজার ও তৃতীয় ২ হাজার টাকা। গোটা জেলায় যে পুজো প্রথম হবে তারা পাবে ১৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ১০ হাজার ও তৃতীয় ৫ হাজার টাকা করে। পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা, প্যান্ডেল, আলো ও প্রতিমা— চারটি বিভাগে থাকবে আলাদা আলাদা পুরস্কার।

আপাতত সকলের অ্যাপের দিকে চেয়ে ছাড়া গতি কী?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন