Chandrayan 3 Moon Landing

চন্দ্রযান অবতরণের আঁক গোপনে কষেন নির্নিমেষ

এই প্রকল্পের কাজে স্নাতক স্তরের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে ‘ইন্টার্ন’ হিসেবে নিযুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়। নির্নিমেষ তাঁদেরই এক জন।

Advertisement

সুদেব দাস

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৬
Share:

পরিবারের সঙ্গে যাদবপুরের প্রাক্তননী নির্নিমেষ দে। রবিবার দুপুরে রানাঘাটের বাড়িতে। ছবি সুদেব দাস।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করেছে বিক্রম। এ জন্য ইসরোর সহযোগী তালিকায় যুক্ত হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। দেশের মানুষ যখন করোনা অতিমারিতে গৃহবন্দি, যাদবপুরের কয়েক জন স্নাতক স্তরের পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয়েছিল ল্যান্ডার প্রযুক্তি বিষয়ে ইসরোর রেসপন্ড প্রকল্পের কাজ। তাতে যোগ দিয়েছিলেন নদিয়ার রানাঘাটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র, বছর তেইশের নির্নিমেষ দে। চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণের নেপথ্যে 'রাতজাগা সৃষ্টিসুখ' যে কাজে এসেছে, তাতেই এখন তৃপ্ত যাদবপুরের প্রাক্তনী।

Advertisement

চন্দ্রযান ২ যে কারণে সফল অবতরণে ব্যর্থ হয়েছিল, সেখান থেকেই যাত্রা শুরু চন্দ্রযান ৩-এর। ২০২০ সালে চন্দ্রযান ৩ অভিযানের জন্য যখন প্রস্তুতি শুরু করে ইসরো, তখনই ল্যান্ডার প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার রেসপন্ড প্রকল্পে যোগ দেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের দুই অধ্যাপক। তাঁদের এক জন গবেষক অমিতাভ গুপ্ত, অপর জন সায়ন চট্টোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের কাজে স্নাতক স্তরের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে ‘ইন্টার্ন’ হিসেবে নিযুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়। নির্নিমেষ তাঁদেরই এক জন। রানাঘাট শহরের কামারপাড়ায় স্বামী বিবেকানন্দ সরণীর বাড়িতেই ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা নির্মিমেষের। বাবা নির্মলকুমার দে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী, মা টিংকু দে-ই ছেলেমেয়েকে সামলেছেন। দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে ছোট নির্নিমেষ। রিমোটের খেলনা গাড়ি কী ভাবে কাজ করে, তা জানার আগ্রহ ছিল তার ছোট থেকেই। ২০১৮ সালে রানাঘাট পালচৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৩.৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন নির্নিমেষ।

রবিবার সকালে রানাঘাটের বাড়িতে বসে যাদবপুরের প্রাক্তনী বলেন, "এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে করতে হবে, এই শর্তেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলাম। তাই বন্ধুবান্ধব দূরে থাক, লকডাউনের সময় রাত জেগে কম্পিউটারে কী করে চলেছি, তা বাবা-মায়ের কাছেও গোপন রাখতে হয়েছে।" তাঁর কথায়, "কী ভাবে থ্রাস্টার ফায়ারিং সিকোয়েন্সকে গাণিতিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চন্দ্রযানের সফট ল্যান্ডিং করানো যায়, সেই কাজটাই আমাদের করতে হয়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে জানতে পারি আমাদের প্রকল্প গ্রহণ করেছে ইসরো। নিঃসন্দেহে এটা আমার কাছে আনন্দের।"

Advertisement

বর্তমানে নির্নিমেষ কলকাতায় একটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সহায়তা সংস্থায় কর্মরত। সুযোগ পেলে আবার তিনি দেশের জন্য গবেষণামূলক কাজ করতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন