ঘটনাস্থলে দমকলের কর্মীরা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।
ধোঁয়ার উৎস নিয়ে ধোঁয়াশাই রয়ে গেল। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ব্যাখ্যা মিলল না।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নীচতলায় উত্তর দিক লাগোয়া ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে আচমকা ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল। এর পরে গোটা একটা দিন পরেও ধোঁয়ার উৎস জানা যায়নি।
ধোঁয়া বেরনোর সময়ে ওই ঘরে ভর্তি ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেন-সহ ১২ জন রোগী। সকলের মুখেই ছিল অক্সিজেন মাস্ক। ধোঁয়ার বিষয়টি দ্রুত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিনও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। হাসপাতাল ও পূর্ত দফতরের কর্তারা চলে আসেন। বহরমপুর থানা থেকে চলে আসে পুলিশ।
তার আগে ওই ধোঁয়া যাতে ঘর জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য সিসিইউয়ের বাইরের দরজার দিকে মুখ করে বড় পেডেস্টাল ফ্যান লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে ধোঁয়া বের করতে সিসিইউয়ের সমস্ত এক্সস্ট ফ্যানও চালিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ঘরে থাকা এক ডজন বাতানুকূল যন্ত্র। সিসিইউয়ের কর্তব্যরত চিকিৎসক পিয়ালি যাদব বলেন, ‘‘সেই সময়ে সিসিইউয়ের দরজা খোলা ছিল। ওই দরজা দিয়ে আচমকা কুয়াশার মত সাদা ধোঁয়া ঘরের মধ্যে ঢুকতে দেখি। তখনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই।’’
এর আগে গত ২৭ অগস্টেও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে বাতানুকূল ঘর থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছিল। আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরোতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান দু’জন। বেশ কয়েক জন জখম হন। এর পরেই হাসপাতালে ‘ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম’ নতুন করে লাগানো হয়।
এ বারের ঘটনার সময়ে উপস্থিত চিকিৎসক থেকে রোগীর বাড়ির আত্মীয়দের অনেকের চোখ জ্বালা শুরু হয়। এসি থেকে কোনও ভাবে ওই ধোঁয়া বের হয়েছে কি না জানতে পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ কর্মীরা ওই সন্ধ্যায় প্রতিটি বাতানুকূল যন্ত্র খুলে পরীক্ষা করেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই ঘরের অক্সিজেন পাইপ লাইন থেকে বিদ্যুতের তার ও বাতানুকূল যন্ত্র নতুন করে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু কোথাও কোনও ত্রুটি চোখে পড়েনি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের সুপার তথা কলেজের সহ-অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার পরেও ধোঁয়ার কোনও উৎসব খুঁজে পাওয়া যায়নি।’’
ঘটনা হল, সিসিইউয়ে ‘স্মোক ডিটেক্টর’ লাগানো রয়েছে। কিন্তু ঘর ধোঁয়ায় ভরে গেলেও কোনও রকম ‘অ্যালার্ম’ বাজেনি কেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।