Jagadhatri Puja

অঞ্জলিতে নয়, ভিড়ের গুঁতো লাগেনি রাতেও 

কৃষ্ণনগরে এক দিনের পুজো হলেও আগের সন্ধে থেকেই রাস্তায়, মণ্ডপে ভিড় হতে শুরু করে। সারা রাত ধরে দর্শকেরা ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দেখেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৭
Share:

কৃষ্ণনগর চাযাপাড়া বারোয়ারিতে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সাঙের তরজার মধ্যে নাগরিকদের সচেতনতা ও দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছিল, তা স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে জিতে গেল কৃষ্ণনগর!

Advertisement

রবিবার থেকেই পূর্বাভাস ছিল। সোমবার, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, পুষ্পাঞ্জলি থেকে ঠাকুর দেখা পর্যন্ত করোনা বিধি মানার ক্ষেত্রে অনেকটাই সংযম দেখাল বাংলায় ইদানীংকার জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎপত্তির শহর। রাত বাড়তে মণ্ডপে ঠাকুর দেখার ভিড় বেড়েছে। তবে একে তা অন্য বারের চেয়ে অনেক কম, সুরক্ষাবিধির নিয়ন্ত্রণের বাইরেও যায়নি।

এমনটা যে হতে পারে তা যেন কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। অন্য বার ভিড় ঠেলে বুড়িমার কাছে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা এ বার উধাও। ঠেলাঠেলি না, হুড়োহুড়ি না। নেই সেই চিরপরিচিত দীর্ঘ লাইন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা। নিয়ন্ত্রিত।

Advertisement

প্রতি বছর চাষাপাড়ার বুড়িমার কাছে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য হাজারো মানুষের ভিড় থাকে। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুজো কমিটির লোকজন ও পুলিশকর্মীদের। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি সম্পুর্ণ ভিন্ন। চাষাপাড়া বারোয়ারির সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “আমরা লাগাতার আবেদন করেছি, মণ্ডপে না এসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভার্চুয়াল অঞ্জলি দিতে। তাতে সাড়া দিয়ে অনেকেই আসেননি। অন্য বারের তুলনায় ভিড় অর্ধেকরও কম।”

কমবেশি একই কথা বলছেন শহরের অন্য বারোয়ারিগুলিও। পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, করোনা নিয়ে লাগাতার প্রচারের ফলে মানুষ সচেতন হওয়ার কারণেই এ বার উৎসবে বেলাগাম হয়ে ঘর থেকে বেরোননি অনেকেই। জজকোর্ট পাড়া বারোয়ারির সম্পাদক দেবর্ষি চৌধুরীও বলছেন, “এ বার অঞ্জলি দেওয়ার ভিড় অনেকটাই কম ছিল। বিশেষ করে বয়স্ক মহিলাদের সে ভাবে দেখা যায়নি। মানুষ আসলে করোনার কারণে ঝুঁকি নিতে চাইছে না।”

কৃষ্ণনগরে এক দিনের পুজো হলেও আগের সন্ধে থেকেই রাস্তায়, মণ্ডপে ভিড় হতে শুরু করে। সারা রাত ধরে দর্শকেরা ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দেখেন। রাতের দিকে ট্রেনে করে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন কৃষ্ণনগরের রাস্তায়। এ বার কিন্তু তার কিছুই প্রায় হল না। রাস্তা ও মণ্ডপ ছিল অনেকটাই ফাঁকা। রবিবার সন্ধ্যায় কিছু লোকজন রাস্তায় দেখা গেলেও রাত একটু গড়াতেই তাঁরা ঘরে ঢুকে যান।

কৃষ্ণনগরের প্রবীণ নাগরিক ইন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “এমনিতেই এত দিনে শীতটা জাঁকিয়ে পড়তে শুরু করেছে। তার উপরে করোনার ভয়। এ বার তাই ঠাকুর দেখতে বের হইনি।” ভিড় কম হওয়ার কারণ হিসাবে অনেকেই আবার থিমের অভাবকেই দায়ী করেছেন। এ বার তারাও থিমের ধারকাছ দিয়ে যায়নি। রাতের দিকে অবশ্য অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন। তবে সাবধানে, ঠেলাঠেলি বাঁচিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন