ড্রাইভার রয়েছে! রয়েছে ক্লিনারও। মাসে মাসে তাঁদের বেতনও গুনতে হচ্ছে। কিন্তু যে জন্য এত আয়োজন, সেই অ্যাম্বুল্যান্সটাই নেই! তাই অতিরিক্ত টাকা গুনে ‘রেফার করা রোগীকে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে অন্য হাসপাতালে।
দু’এক মাস নয় প্রায় দু’বছর ধরে এ ভাবেই চলছে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘রেফার করা’ অসুস্থ রোগীকে অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে বেশি ভাড়া গুনে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যেতে হয়। কল্যাণী যেতে হলে ভাড়া তিন হাজার টাকা, ষোলোশো টাকায় কৃষ্ণনগর কিংবা চোদ্দশো টাকায় বহরমপুর।
অথচ সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে গেলে শুধু গাড়ির জ্বালানি খরচ দিলেই চলত। তা হলে অনেক কম খরচ হত রোগীর পরিবারের।
আশেপাশের প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। চিকিৎসক রয়েছেন মোটে ছয় জন। ফলে রোগী সামলাতে হিমসিম খেতে হয় তাঁদের। বাড়াবাড়ি হলে রোগী ‘রেফার’ করতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেই রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে হলে সমস্যায় পড়তে হয় আত্মীয়দের।
আনন্দপল্লির বাসিন্দা বাপন স্বর্ণকার জানান, দিন কয়েক আগে হৃদরোগের অসুস্থ মাকে করিমপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে কল্যাণী হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় বাধ্য হয়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে ভাড়া নেন। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স থাকলে কম খরচ হত।’’
একই অভিযোগ হোগলবেড়িয়ার স্বপন বিশ্বাসের। তিনি জানান, গত সপ্তাহে দুর্ঘটনায় জখম বন্ধুকে ওই হাসপাতাল থেকে শক্তিনগর নিয়ে যাওয়ার জন্য ষোলোশো টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে। করিমপুরের এক সংস্থার সম্পাদক নিশীথ বিশ্বাস জানান, তাঁদের একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ায় রোগী বহন করে। তবে তাঁরা হাসপাতালের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট ভাড়াই নেন। হাসপাতালের সুপার রাজীব ঘোষ জানান, হাসপাতালে বহু পুরনো একটি বড় অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। সেটির যন্ত্রাংশ খারাপ হওয়ায় অনেক বেশি খরচ হত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেই গাড়ির বদলে ছোট গাড়ি দেবে বলে জানিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে সেই অ্যাম্বুল্যান্স চলে আসবে।