পরিবেশ বাঁচাতে এগিয়ে আসছে কচিকাঁচারাও

স্কুলে সবুজ বাড়াতে বিজ্ঞপ্তি

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গ্রিন ট্রাইবুনালের সদ্য আসা নির্দেশটা বছর কয়েক আগেই গ্রামীণ পাঠশালায় যেন আপনাআপনিই ছড়িয়ে গিয়েছিল। সবুজ প্রাণ বুকে নিয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলের আঙিনা সাজানোর রীতিটায় এ বার যেন সরকারি সিলমোহর পড়ল।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:২৪
Share:

ইঞ্চি তিনেকের একটা পাকুড় চারা এনে ক্লাসের কোনে দাঁড়িয়েছিল ছেলেটি।

Advertisement

—ওটা কী রে?

আড়ষ্ট ছেলেটি বিড়বিড় করে, ‘‘স্যর, পাকুড়ের চারাটা জল পাচ্ছিল না। স্কুলের মাঠে পুঁতব?’’

Advertisement

ঘাড় নেড়েছিলেন শিক্ষক। পাকুড়, বকুল, আঁটি সমেত আম— স্কুলের মাঠ জুড়ে তাদের ঘন ছায়া।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গ্রিন ট্রাইবুনালের সদ্য আসা নির্দেশটা বছর কয়েক আগেই গ্রামীণ পাঠশালায় যেন আপনাআপনিই ছড়িয়ে গিয়েছিল। সবুজ প্রাণ বুকে নিয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলের আঙিনা সাজানোর রীতিটায় এ বার যেন সরকারি সিলমোহর পড়ল।

বুধবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার রাজ্যের সব জেলায় স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি-সহ দেশের অন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।

রাজ্যের উদ্যানপালন দফতর, কর্পোরেশন, স্কুল শিক্ষা দফতর ও বেসরকারি স্কুলগুলিকে এক মাসের মধ্যে ‘গ্রিন বেল্ট’ বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে সাহায্যের জন্য উদ্যানপালন বিভাগ, বনদফতরকে স্কুলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে।

নদিয়ার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলছেন, “স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে সবুজায়ন বাড়ানোর বিষয়ে নির্দেশিকা দিয়েছে। স্কুলগুলি এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে।” তাঁর দাবি, “গত বছর আমরা জেলার সব স্কুলে ‘গ্রিন স্কুল, ক্লিন স্কুল’ প্রকল্প নিয়েছিলাম। ফলে বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছপালা, আনাজ খেত, ফুলবাগান করা হয়েছে। সেই সবুজ আরও বাড়ানো হবে।”

নাকাশিপাড়ার রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সঞ্জীব বিশ্বাস বলছেন, “নির্দেশ পেয়েছি। সেই মতো আমরাও স্কুলে আরও গাছ লাগাব।” ধুবুলিয়ার কামারহাটি চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ে আম, দেবদারু, বকুল, পেয়ারা, কৃষ্ণচুড়া গাছ লাগানো হয়েছে আগেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রলয় চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “আমরা তো বহু আগে থেকেই এটা করছি।’’

মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহর লাগোয়া হিকমপুর হাইস্কুল, হরিহরপাড়ার ট্যাংরামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো বেশ কিছু স্কুলে গাছপালার পাশাপাশি ফুলের বাগান, আনাজ, ওষধি বাগান রয়েছে। শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ুয়ারাও হাতে হাত লাগিয়ে স্কুলকে সবুজ করেছে। ওই দুই স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও অসীম অধিকারী বলছেন, ‘‘সবুজ বাঁচাতে ও বাড়াতে যা করণীয় তা করা হবে।’’

মুর্শিদাবাদের জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী বিশ্বাস দে বলেন, ‘‘গাছপালা লাগানোর বিষয়ে খরচ কে বহন করবে তা অবশ্য চিঠিতে বলা না হলেও বনদফতরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। গত বছর বন দফতর স্কুলে বিভিন্ন গাছের চারা দিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন