প্রতিদিন পাত পেড়ে প্রসাদ এক লক্ষ ভক্তকে

ফের নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী খুঁটিয়ে জেনে নিলেন মায়াপুরের সেই প্রকল্পের অগ্রগতির খবর।  

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

মায়াপুরে ইস্কনের মন্দির। নিজস্ব চিত্র

কাগজে কলমে ওই প্রকল্পের নাম ‘শ্রীচৈতন্য কালচারাল ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বার মায়াপুরে এসেছিলেন ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। ইস্কনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মায়াপুরে একটি ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম সেন্টার তৈরি করতে চেয়ে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছিল। সে দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে রাজ্য সরকারের সাহায্যের কথা জানিয়েছিলেন। প্রায় দু’ বছরের মাথায় ফের নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী খুঁটিয়ে জেনে নিলেন মায়াপুরের সেই প্রকল্পের অগ্রগতির খবর।

Advertisement

মায়াপুরে ঠিক কী গড়তে চাইছেন ইস্কন কর্তৃপক্ষ? ইস্কনের বিশ্ব আধ্যাত্মিক মুখ্য কার্যালয়ের ভূমি বিভাগের প্রধান অলয়গোবিন্দ দাস বলেন, “ চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা এবং আদর্শকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে চলেছে ইস্কন। এই মুহূর্তে একশো পঁচিশটি দেশে রয়েছে ৬৫০টি ইস্কনের কেন্দ্র। সেই সব দেশের মানুষ মায়াপুরে আসতে চান। তাঁদের আমরা সে ভাবে আপ্যায়ন করতে পারি না। এই হেরিটেজ সেন্টারে তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।”

তিনি জানিয়েছেন, মায়াপুর এবং সংলগ্ন এলাকা মিলিয়ে মোট সাড়ে সাতশো একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠবে ওই কেন্দ্র। এর মধ্যে মায়াপুরে এক লপ্তে ছ’শো একর জুড়ে তৈরি হবে প্রধান কেন্দ্র। বৈষ্ণবেরা বিশ্বাস করেন, নবদ্বীপ নয়টি দ্বীপের সমষ্টি। পৃথক পৃথক ভাবে সেই নয়টি দ্বীপে গড়ে তোলা হবে হেরিটেজ সেন্টারের অংশ। অলয়গোবিন্দ দাস জানান, “এর জন্য ইতিমধ্যে মহিশুরা, বেলপুকুর, ব্রহ্মনগর, নৃসিংহদেব তলা, হরিহরক্ষেত্রের মতো জায়গায় জমি তৈরি হয়ে আছে। প্রায় সাড়ে সাতশো একর জমি, ট্রাস্ট, মন্দির তৈরি আছে। কাজ শুরু হলেই সব এক ছাতার তলায় চলে আসবে।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, বিশ্বের পঁয়তাল্লিশটা বাছাই করা রাষ্ট্রের ‘স্পিরিচ্যুয়াল এম্ব্যাসি’ বা আধ্যাত্মিক দূতাবাস থাকবে হেরিটেজ সেন্টারের মধ্যে। বিভিন্ন দেশের পরিবেশ সেখানে কৃত্রিম ভাবে গড়ে তোলা হবে। সেখানকার খাওয়া, পোশাক, বাড়িঘর ও যাবতীয় খুঁটিনাটি এমন ভাবে সেখানে থাকবে যাতে মনে হবে, সেই দেশেই এসেছেন। থাকবে দুশো শয্যা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক হাসপাতাল। পঞ্চাশ হাজার মানুষ ওই সেন্টারে থাকতে পারবেন। প্রতিদিন এক লক্ষ লোকের প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে ওই প্রস্তাবিত সেন্টারে। অলয়গোবিন্দ দাস জানিয়েছেন, নির্মীয়মাণ নতুন মন্দির হল হেরিটেজ সেন্টারের প্রথম ধাপ। ২০২২ সালে এর উদ্বোধন হবে, সঙ্গে থাকবে একটি অত্যাধুনিক পার্ক। ওই মন্দিরকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু হবে। গোটা প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় তিন হাজার কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন