আমার স্যার...

ছাত্রছাত্রীদের স্নেহ করতেন সন্তানের মতো

পড়াশোনা? সে তো এগারো ক্লাসের পর আর এগোয়নি। তবে কি জানেন, ‘স্যার’ বললেই এখনও আমাদের সেই ঘোজাগ্রামের বিজিতবাবুর মুখটাই ভেসে ওঠে। সেই স্নেহের ডাক, ‘লালি, একটু শুনে যা তো মা।’ গুরুগম্ভীর গলা। আমরা তখন বড়জোর ক্লাশ সেভেন। উনি যা বলতেন, তার পরে আর কোনও প্রশ্ন জাগত না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩২
Share:

পড়াশোনা? সে তো এগারো ক্লাসের পর আর এগোয়নি। তবে কি জানেন, ‘স্যার’ বললেই এখনও আমাদের সেই ঘোজাগ্রামের বিজিতবাবুর মুখটাই ভেসে ওঠে।

Advertisement

সেই স্নেহের ডাক, ‘লালি, একটু শুনে যা তো মা।’ গুরুগম্ভীর গলা। আমরা তখন বড়জোর ক্লাশ সেভেন। উনি যা বলতেন, তার পরে আর কোনও প্রশ্ন জাগত না। এমন গম্ভীর অথচ স্নেহপ্রবণ, বেশি দূর পড়াশোনা হয়নি ঠিকই, তবে অমন শিক্ষক তো আর পাইনি। তাই শিক্ষক দিবসে, ছেলেরা যখন স্কুলে যায় তখন আমাদের শিক্ষাবিজ্ঞানের বিজিতকান্তি মণ্ডলই ভেসে ওঠেন, এই এত দিন পরেও।

২৭ বছর আগে আমার বিয়ে হয়ে গেল মাজদিয়ায়। বাপের বাড়ি, উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজা ছেড়ে চলে এলাম। । গ্রামের জুনিয়র হাই স্কুলে পড়তাম। আমি যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়তাম তখন বিজিতবাবু আমাদের স্কুলে যোগ দেন। পান খেতেন। সর্বদা হাসিমুখ। ছাত্রছাত্রীদের স্নেহ করতেন সন্তানের মতো। শুধু পড়াশোনা নয়, স্কুলের মাঠে আমাদের ব্রতচারী, নাচ-গান শেখাতেন।

Advertisement

স্যার বলতেন, ‘শুধু বইয়ে মুখ গুঁজে রাখলে হবে, চল বেরিয়ে আসি।’ সবাই মিলে চললাম মুর্শিদাবাদ। সেই প্রথম বাড়ির বাইরে পা রাখা। আমাদের আড়ষ্ঠতা দেখে বলেছিলেন, ‘ভয় কী রে! ভয়কে জয় করতে না পারলে তবে তো জীবনে কিছু করতে পারবি।’

সে কথাটা এখন মাঝে মধ্যে মনে পড়ে। ওই সাহসটা বুকে নিয়ে যদি আর একটু এগোতে পারতাম, তা হলে অন্তত মাঝ পথে পড়াশোনাটা ছাড়তে হত না! আজ, ফের স্যারের কথা মনে পড়ে গেল। ভাল থাকবেন স্যার।

অর্পিতা ভৌমিক

মাজদিয়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন