—প্রতীকী চিত্র।
বন্দিদের হাতের কাজের সামগ্রী বিক্রির জন্য একটি আউটলেট খুললেন বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকালে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার চত্বরে এই আউটলেটের উদ্বোধন করেন কারাদফতরের ডিআইজি দেবাশিস মুখোপাধ্যায়।
এতদিন বন্দিদের তৈরি ওই সব সামগ্রী কলকাতায় জেল ডিপোতে পাঠানো হত। সেখান থেকে বন্দিদের তৈরি সামগ্রী বিভিন্ন জেলে, এমনকী খোলা বাজারেও বিক্রি করা হত। এ বার থেকে বহরমপুরের ওই আউটলেটেও তা পাওয়া যাবে।
বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার টি আর ভুটিয়া বলছেন, “বন্দিদের বানানো দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ওই আউটলেটে পাওয়া যাবে।” তাঁর দাবি, শহরের বাসিন্দাদের পাশাপাশি সংশোধনাগারে আসা লোকজন, সংশোধনাগারের কর্মীরা এই দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনতে পারবেন।
জেল সুপার জানান, খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সালারের বালি মোল্লা এবং সাগরদিঘির সানিবুর শেখ ১০ বছর ধরে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি হিসেবে রয়েছে। তাদের আচার আচারণ ভাল হওয়ায় মাস পাঁচেক থেকে সংশোধনাগারের বাইরে বেরোনোর সুযোগ পেয়েছে। সেই দু’জনকে দিয়ে এই দোকান চালু করা হয়েছে।
ডোমকল থেকে এ দিন সংশোধনাগার চত্বরে এসেছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। পছন্দ হওয়ায় তিনি বন্দিদের তৈরি দুটি গামছা কিনে নিলেন ওই আউটলেট থেকে। পরে জানালেন, “সংশোধনাগার মানুষকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ ভাবে বন্দিদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।”
বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে এখানে আগে থেকে গামছা, তোয়ালে, বেড কভার তৈরি হয়। এছাড়াও মাস দশেক আগে এখানে খাসির মাংস, মুরগির মাংস, আম লংকা, আমলকির আচার তৈরি করা হচ্ছে। বছর খানেক আগে থেকে পাট দিয়ে ব্যাগ, পাপোস, পুঁতির নানা রকম খেলনা তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি এখানে মেশিন বসিয়ে মুড়ির ভাজা হচ্ছে, এছাড়াও কেক পাউরুটি-সহ নানা রকম বেকারির সামগ্রীর তৈরি হচ্ছে। কাঠের চেয়ার-টেবিলও তৈরি হচ্ছে। এমনকি সংশোধনাগারের ভেতরে আনাজ চাষ হচ্ছে।
১৬ জন বন্দিকে দিয়ে সংশোধনাগারের ভেতরে ক্যান্টিন খোলা হয়েছে। সেই ক্যান্টিনে সকালের টিফিন থেকে দুপুর ও রাতের খাবার। মিস্টি ও সন্ধ্যায় তেলেভাজা পাওয়া যায়। ওই সব সামগ্রীর পাশাপাশি ক্যান্টিনের তৈরি শুকনো খাবারের ঠাই মিলেছে সংশোধনাগারের আউটলেটে।