কন্যাশ্রীদের যুদ্ধ বহাল, রুখল বিয়ে

শক্তিপুর থানার সোমপাড়া এলাকায় কন্যাশ্রীরা যোদ্ধারা গিয়ে শুক্রবার ওই দুই নাবালিকার বিয়ে করে। ওই নাবালিকা প্রথম থেকেই বিয়েতে গররাজি ছিল। বাড়ির লোককে তারা সে কথা জানিয়েও ছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিয়ের পাক্কা বন্দোবস্ত করে ফেলেন বাড়ির লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শক্তিপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫১
Share:

কিশোরীর বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

এক দিনে জোড়া নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করল কন্যাশ্রী যোদ্ধারা। শক্তিপুর থানার সোমপাড়া এলাকায় কন্যাশ্রীরা যোদ্ধারা গিয়ে শুক্রবার ওই দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে। ওই নাবালিকা প্রথম থেকেই বিয়েতে গররাজি ছিল। বাড়ির লোককে তারা সে কথা জানিয়েও ছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিয়ের পাক্কা বন্দোবস্ত করে ফেলেন বাড়ির লোকজন। শেষতক কন্যাশ্রী যোদ্ধারা আসরে নামেন। রুখে দেয় বিয়ে।

Advertisement

শক্তিপুর থানার মানিক্যহার গ্রামের বাসিন্দা ফড়িং ঘোষ তাঁর পনেরো বছরের মেয়ে পায়েল ঘোষের বিয়ে ঠিক করেছিলেন শক্তিপুর এলাকাতেই। বিয়ে তারিখ স্থির হয় ২৭ শ্রাবণ। পায়েল মানিক্যহার সারেঙ্গি সুন্দর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সাত দিন আগে সে জানতে পারে, সামনেই তার বিয়ে। সে বিয়েতে রাজি হয়নি। পায়েল বিষয়টি স্কুলের বন্ধুদের জানায়। বন্ধুদের মারফত বিষয়টি শিক্ষকদের কানে যায়। সেখান থেকেই বিষয়টি জানতে পারে কন্যাশ্রী যোদ্ধা ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা। বুধবার কন্যাশ্রী যোদ্ধারা পায়েলের বাড়ি যায়। তারা পায়েলের বাবা-মাকে নাবালিকা বিয়ে‌র মন্দ দিকগুলি বললেও কথা শোনেননি তাঁরা।

শুক্রবার পুনরায় কন্যাশ্রী যোদ্ধারা পায়েলের বাড়ি যায়। সঙ্গে ছিল পুলিশ। কন্যাশ্রী ও পুলিশ উভয়ে মিলে পায়েলের বাবা-মাকে বোঝায়। তারপর তাঁরা লিখিত ভাবে জানান, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না। মানিক্যহার সারেঙ্গি সুন্দর হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মলয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পায়েল পড়াশুনোয় ভাল। ও পড়তে চাই। শুক্রবার আমিও পায়েলের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে। পায়েল আবার পড়াশুনো করবে।’’

Advertisement

দ্বিতীয় ঘটনাও শক্তিপুরে। বলিহরপাড়া গ্রামে। গ্রামের আশারুল শেখ তার ষোলো বছরের মেয়ে আরজিনা খাতুনের বিয়ে দিচ্ছিল ওই গ্রামেই। বৃহস্পতিবার ছিল রেজিস্ট্রির তারিখ। কিন্তু তার আগে আরজিনা শিশু সুরক্ষা কমিটির কাছে যায়। সে বিয়েতে তার অমতের কথা জানায়। কন্যাশ্রী যোদ্ধারা মেয়ের বাবা-মা ও রেজিস্ট্রারকে বোঝায়। ফলে বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি বন্ধ হয়। কিন্তু পরে আবার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল আরজিনার অভিভাবকেরা। শুক্রবার কন্যাশ্রী যোদ্ধারা পুলিশের সহযোগিতায় তাদের বাড়ি যায়। বিয়ে থমকে যায়।

বেলডাঙা-২ এর বিডিও সমীর রঞ্জ‌ন মান্না বলেন, ‘‘দুই ছাত্রীই নিজেদের উদ্যোগে বিয়ে রুখেছে। তাদের সাহায্য করেছে কন্যাশ্রী যোদ্ধারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন