জরুরি বিভাগের সামনে টোটো, অ্যাম্বুল্যান্সে খাবি খাচ্ছে রোগী

জরুরি বিভাগের দাঁড়ানো অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে তখন পথ দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম এক রোগী। কিন্তু রোগীকে স্ট্রেচারে চাপিয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। হাসাপাতালে ঢোকার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে মোটরবাইক, টোটো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৫
Share:

টাঙানো রয়েছে নির্দেশিকা। কিন্তু তা মানেছে কে? —নিজস্ব চিত্র

জরুরি বিভাগের দাঁড়ানো অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে তখন পথ দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম এক রোগী। কিন্তু রোগীকে স্ট্রেচারে চাপিয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। হাসাপাতালে ঢোকার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে মোটরবাইক, টোটো। সে সব সরিয়ে জখম ওই ব্যক্তিকে যখন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হল ততক্ষণে কেটে গিয়েছে ১০ মিনিট।

Advertisement

কান্দি মহকুমা হাসপাতালে এমন চিত্র রোজ দিনের। রোগীর আত্মীয়দের একাংশ জানান, জরুরি বিভাগের সামনে প্রায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাইকেল ও মোটরবাইক। হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের সামনের ছবিটাও একই। এ ছাড়াও হাসপাতালের মধ্যে রাস্তার ধারে ইতিউতি ছোটগাড়ি, টোটো, মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে গল্প-আড্ডা।

অথচ হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে সাইকেল গ্যারেজ। রয়েছে গাড়ি পার্কিং করার জায়গাও। কিন্তু সেখানে পা পড়ে না কারও। নিজেদের ‘সুবিধে’র কথা ভেবে চলে ‘নো পার্কিং’ এলাকায় গাড়ি রেখে রোগীকে দেখেতে যান অনেকেই।

Advertisement

তিনশো শয্যার ওই হাসপাতালে কান্দি মহকুমার কান্দি, বড়ঞা, খড়গ্রাম ভরতপুর ১ ও ২ নম্বর মোট পাঁচটি ব্লকের বাসিন্দারা চিকিৎসা করাতে আসেন। পড়শি জেলা বীরভূম ও বর্ধমানের ময়ূরেশ্বর, লাভপুর ও কেতুগ্রামের বাসিন্দারা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। স্বাভাবিক ভাবেই রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা যে নেই এমন নয়। হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে টিনের ছাউনি দেওয়া পার্কিংয়ের জায়গা। কিন্তু সেখানে কেউ গাড়ি রাখেন না। কেন পার্কিং এলাকায় গাড়ি মোটরবাইক রাখেন না তা এক মোটরবাইক চালককে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর সটান জবাব, “সবাই এখানেই রাখে। তাই আমিও রেখেছি।”

যদিও যত্রতত্র পার্কিং করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না রোগীর আত্মীয়দের অনেকেই। খড়গ্রামের বাসিন্দা দেবাংশু দাস বলেন, “অসুস্থ কাকুকে নিয়ে গাড়িতে চেপে খড়গ্রাম থেকে কান্দি পর্যন্ত আনতে যতটা কষ্ট না হয়েছে তার থেকে বেশি কষ্ট হয়েছে হাসপাতালের গেট থেকে জরুরি বিভাগ পর্যন্ত আনতে।’’

হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা নেয়নি এমন নয়। জরুরি বিভাগের সামনে পার্কিং করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়েছে। কিছুদিন নজরদারিও চলে। তখন ক’দিন বন্ধ ছিল। কিন্তু লাগাতার নজরদারি না থাকায় ফের সেই আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্র মান্ডি বলেন, “ব্যবস্থাও নিয়েছিলাম। কিন্তু পার্কিং জোনে মধ্যে গাড়ি না রাখার কারণেই সমস্যা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, রোগী কল্যাণ সমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। দরকারে পুলিশের সাহায্যও নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন