ডাকঘরের ভাঁড়ার শূন্য, কপালে ভাঁজ পেনশনভোগীর

বেলা গড়িয়ে গিয়েছে। তা যাক, বেলডাঙা উপ-ডাকঘরের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিধান মণ্ডল। বলছেন, ‘‘সরে যাব কোথায় বলুন তো! যে ক’টা টাকা পড়ে রয়েছে তা তো এই ডাকঘরেই, না পেলে খাব কী?’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০৭
Share:

বেলা গড়িয়ে গিয়েছে। তা যাক, বেলডাঙা উপ-ডাকঘরের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিধান মণ্ডল।

Advertisement

বলছেন, ‘‘সরে যাব কোথায় বলুন তো! যে ক’টা টাকা পড়ে রয়েছে তা তো এই ডাকঘরেই, না পেলে খাব কী?’’ বাস্তবিকই তার সংসার এখন বড়সড় প্রশ্ন চিহ্নের সামনে।

বিধানবাবু একা নন, তালিকাটা এই এলাকায় দীর্ঘ। প্রদ্যোৎ মুখোপাধ্যায় তাঁদেরই এক জন। ডাকঘরের বুক বেঁধে, এত দিন যাঁরা মাস মাইনে থেকে বার্ধক্য ভাতা— মাস পয়লা চেয়ে থাকতেন ডাকঘরের দিকে, টাকা শুনে তাঁদের এখন মাথায় আকাশ ভাঙার ডাক।

Advertisement

প্রদ্যোৎবাবু বলছেন, ‘‘আমার এখানে সেভিংস অ্যাকাউন্ট আছে। তাতে টাকা কিছু জমাও আছে। সে টাকা তুলতে না পারলে সংসার চলবে কী করে জানি না।’’

জানাচ্ছেন, পোস্টমাষ্টারকে নানা ভাবে বুঝিয়েও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

নোট বাতিলের জেরে মুশির্দাবাদ জেলার পোস্ট অফিস গুলোতে এমনই হাহাকার। টাকা নেই দীর্ঘ দিন। এক গ্রাহকের কথায়, ‘‘গত অক্টোবরে পোস্ট অফিসে সিবিএস হচ্ছিল বলে প্রায় কোনও কাজ হয়নি। ফলে যারা মাসে গচ্ছিত জমার উপর প্রাপ্য তুলে সংসার চালান তাঁরা প্রায় ধনেপ্রাণে মরতে বসেছেন।’’

বেলডাঙা মাড্ডার শাখা পোস্ট অফিসেও চেহারাটা একইরকম। পোস্টঅফিসের এক কর্মী জানালেন, ‘‘এখানে প্রায় ১৫০০ মানুষের অ্যাকাউন্ট আছে। তাদের প্রয়োজনটা বুঝতে পারছি, কিন্তু দেব কোথা থেকে, টাকা কোথায়?’’

বেলডাঙা রেলবাজারের উপ ডাকঘর। বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল একই চিত্র। স্থানীয় রহমত শেখ কপালে ভ্রু কুঁচকে দাড়িয়ে আছেন। তার কথায়,‘‘ জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছি। তার পরির্চযা করতে প্রচুর খরচ। কিন্তু কাছে যা টাকা ছিল সব শেষ। পোস্ট অফিসে টাকা তুলতে এলাম এখানে বললো টাকা নেই। কি করবো বুঝতে পারছি না।’’ কিন্তু কেন?

পোস্ট অফিসের বহরমপুর সদর মহকুমার দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ মুর্মু বলেন, ‘‘রোজ নিয়ম করে ব্যাঙ্কে ধর্না দিচ্ছি। বারো দিন হয়ে গেল, ব্যঙ্ক আমাদের টাকা দিচ্ছে না। গ্রাহকেরা যে মারধর করছেন না এই ঢের।’’আর ব্যাঙ্ক? তাদের দায়সারা জবাব মিলেছে, ‘‘চেষ্টে টাকা নেই এলেই জেলার লিড ব্যাঙ্ক পোস্ট অফিসে টাকা পাঠিয়ে দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন