চিয়ারলিডারের হাতছানিতেই ফিরছে ফুটবল

অন্তত আয়োজকেরা তেমনই দাবি করছেন। হদ্দ মফস্সল, মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থেকে কাঁটাতারের গা ঘেঁষা মুরুটিয়া— দু-তিন রাতের ফুটবলে খেলা এখন রাতজাগানিয়া আসরের মতো।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩০
Share:

নৈশ ফুটবলের আগে। শুক্রবার ইসলামপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা শীতে ফের এসে পড়েছে সে! পুজো শেষে, যুব বিশ্বকাপের হাত ধরে যে রং ছড়িয়েছিল দেশ জুড়ে, কলকাতা দেখেছিল রঙের ঝিলিক, আইএসএলের ঝলমলে বিজ্ঞাপনে যার রেশ গাজরের মতো ঝুলে রয়েছে এখনও— সেই আঁধার আলো করা রাতের ফুটবল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের প্রান্তির আকাশের রং ছড়াতে শুরু করেছে হালে। রঙিন ফুটবলের ঘেরাটোপে, পায়ের যাদু কতটা দেখা যাচ্ছে, প্রশ্ন একটা থেকে যাচ্ছে, বরং নিশ্চিৎ করা যাচ্ছে তার বাইরের জাঁক নিয়ে।

Advertisement

অন্তত আয়োজকেরা তেমনই দাবি করছেন। হদ্দ মফস্সল, মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থেকে কাঁটাতারের গা ঘেঁষা মুরুটিয়া— দু-তিন রাতের ফুটবলে খেলা এখন রাতজাগানিয়া আসরের মতো। তবে, ফুটবলের চেয়েও সে সব রাতের খেলায় বেশি প্রচার পাচ্ছে ফানুস, ফুলঝুরি কিংবা চিয়ার লিডারের বিকল্প ম্যাজিক শো। ইসলামপুর তেমনই এক রাতের ফুটবল দেখতে চলেছে। থাকবে নেতাজি পার্কের খোলা মাঠে রাতারাতি গড়ে ওঠা বাঁশের গ্যালারিতে ভিআইপি বক্স, শিশির বাঁচানো শামিয়ানাও।

আয়োজকদের পক্ষে মিজানুর রহমান বলছেন, ‘‘দেখুন না,তাক লাগিয়ে দেব, একেবারে গ্রামীণ আইএসএল বলতে পারেন!’’ উন্মাদনা যে সত্যিই তৈরি হয়েছে খোঁজ মিলেছে তার, দূরের শহরে কর্মরতদের দু’দিনের ছুটি নিয়ে গ্রামে ফেরার হিড়িক দেখে। হারানো ফুটবল রাতের হাত ধরে ফিরে আসছে নদিয়ার গ্রামীণ গাঁ-গঞ্জেও। দর্শক টানতে সেখানেও বাজি-পটকা, ডিজে-ব্যাঞ্জো মাইকে তারস্বরে ফুটবলের ধারাভাষ্য এমনকী চিয়ারলিডারের ঝাঁজও রয়েছে। মুরুটিয়ার দিঘলকান্দির একটি ক্লাবের পরিচালনায় এমন রাতের ফুটবল হচ্ছে বছর কয়েক ধরেই। আশেপাশের গ্রামের মহিলারাও রাত জেগে মাঠে বসে খেলা দেখেন, শিশির থেকে বাঁচতে মাথায় ঢেকে নেন প্লাস্টিকের চাদর। তেহট্টের বেতাইয়ে সদ্য হয়ে গেল এমনই এক রাতের ফুটবল। খেলে গেলেন, এক গুচ্ছ বিদেশি ফুটবলার। মাঠ জুড়ে খেলার চেয়েও বেশি উন্মাদনা অবশ্য ছিল চিয়ার লিডারদের তাণ্ডব দেখতে। করিমপুর আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুজিত বিশ্বাস বলেন, “রাতের ফুটবলের হাত ধরেই নতুন করে মানুষ ফিরছেন মাঠে।’’ তবে, বহরমপুরের এক পরিচিত ফুটবল কোচ বলছেন, ‘‘সবই তো বুঝলাম, কিন্তু রাতের আসরের এই বাগাড়ম্বরের ফুটবলের কতটা উন্নতি হচ্ছে, সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।’’

Advertisement

হেমন্তের শিশির বাঁচিয়ে চিয়ার লিডারের উল্লাসে চোখ ঠিকরে যাওয়া দর্শকদের সে কথা কানে ঢুকছে কিনা জানা নেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন