সন্ধে হলে বন্ধ দোকান, ওষুধ কিনতে কাহিল কান্দি

ওষুধের দোকানটা হাসপাতাল চত্বরেই। তবে, সাঁঝ নামলেই হড়হড়িয়ে নেমে যায় শাটার। যেন, রোগবালাই আবার রাতে হয় নাকি! আর তাই, ছটফট করতে থাকা প্রসূতি থেকে জ্বরের ঘোরে বেঁহুশ রোগী কিংবা সামান্য কাটা-ছেঁড়া-ভাঙার পথ্য খুঁজতে রোগীর বাড়ির লোককে ছুটতে হয় শহরের অন্য প্রান্তে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০১
Share:

ওষুধের দোকানটা হাসপাতাল চত্বরেই। তবে, সাঁঝ নামলেই হড়হড়িয়ে নেমে যায় শাটার। যেন, রোগবালাই আবার রাতে হয় নাকি!

Advertisement

আর তাই, ছটফট করতে থাকা প্রসূতি থেকে জ্বরের ঘোরে বেঁহুশ রোগী কিংবা সামান্য কাটা-ছেঁড়া-ভাঙার পথ্য খুঁজতে রোগীর বাড়ির লোককে ছুটতে হয় শহরের অন্য প্রান্তে।

রাতে তাই রোগী নিয়ে হাসপাতালমুখো হওয়াই ছেড়ে দিয়েছেন গোকর্ণ কিংবা সালার, বড়ঞা না হয় খড়গ্রামের প্রান্তিক গ্রামের মানুষজন।

Advertisement

তাঁদের অধিকাংশের অভিযোগ— ‘গিয়ে কী করব শুনি! ওষুধ তো আর হাসপাতাল চত্বরের দোকানে পাব না।’ ফলে, রাতে রোগ-বালাই হলে কান্দির গ্রামীণ মানুষ স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতাল এড়িয়ে সটান হাজির হন কান্দি হাসপাতালে। ফলে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে, একই সঙ্গে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান এবং হাসপাতল— দুয়ের উপরেই চাপ বাড়ছে।

কান্দি মহকুমা জুড়ে রয়েছে পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতাল। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, তবে ওষুধ মেলে শুধু কান্দি মহকুমা হাসপাতাল চত্বরের ওষুধের দোকানেই। রাত পর্যন্ত সে দোকান খোলা থাকে। অন্যত্র দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক টুকরো গজ থেকে সামান্য জ্বরের ওষুধের খোঁজেও রোগীর বাড়ির লোকজনকে ছুটতে হয় শহরের অন্য কোনও ওষুধের দোকানে।

সালার এলাকার বাসিন্দা আরিফ খান বলেন, “সপ্তাহ দুয়েক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত এক আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যেতেই চিকিৎসকেরা একটি ওষুধের নাম লিখে কাগজ ধরিয়ে দিল। কিন্তু বাইরে এসে দেখি সমস্ত ওষুধের দোকান বন্ধ।’’
পরে ফের চিকিৎসকের সহযোগিতায় ওষুধের ব্যবসায়ীকে ফোন করে ওষুধ কেনা হয়। একই অভিজ্ঞতা গোকর্ণ গ্রামীণ হাসপাতালেও একই ধরণের সমস্যায় পরেছিলেন ছোটন দাস। ছোটনবাবু বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে ওষুধের অনেক দোকান আছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কোনও দোকান খোলা থাকেনা। ফলে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।”

কান্দি মহকুমা ড্রাগ অ্যান্ড কেমিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক অভিজিৎ সিনহা বলেন, “এমন অভিযোগ ঠিক নয়। ভরতপুরের ব্যবসায়ীরা রাতেও পরিষেবা দেয়। বাকী এলাকার ব্যবসায়ীরা ওষুধের প্রয়োজন হলে ঘুম থেকে উঠে ওষুধ দেন।” বড়ঞার ওষুধ ব্যবসায়ী তাপস দাস বলেন, “এখন তো অধিকাংশ ওষুধ হাসপাতাল থেকেই দেয়। তাই আর দোকান খোলা রাখি না।’’

কান্দির মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সত্যজিৎ সরকার অবশ্য হাত ধুয়ে ফেলছেন, “ওষুধের দোকান খোলা রাখবে কী না রাখবে সেটা সিদ্ধান্ত নেবে ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে আমরা কী করব।’’

এখন প্রশ্ন, রোগীর বাড়ির লোকেরাই বা তা হলে কী করবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন